লিভার রোগ নিয়ন্ত্রণে ন্যাসভ্যাক সবচাইতে কার্যকর ওষুধ

    ‘২৮ জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস’। বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসে এবছরের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আসুন খুঁজি লক্ষ অজানা রোগীদের’।

    এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২৭ জুলাই অন্যান্য বছরের মত এবছরও ফোরাম ফর দি স্টাডি অব দি লিভার বাংলাদেশ বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস ২০১৯ যথাযথ গুরুত্বসহকারে পালন করেছে।

    এই উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ফোরাম ফর দি স্টাডি অব দি লিভার বাংলাদেশ এর উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

    উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি।

    বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল এমপি।

    আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেনঃ বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, আহবায়ক সম্প্রীতি বাংলাদেশ, মেজর জেনারেল (অবঃ) মোহাম্মদ আলী শিকদার ভূ-রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক, নাসির উদ্দিন, সাবেক তথ্য সচিব,অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া পরিচালক  শহীদ সোহরোওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,
    ডা. শ ম গোলাম কায়সার ডিপিএম এআরসি ভাইরাল হেপাটাইটিস এন্ড ডায়রিয়া প্রোগ্রাম কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর,
    শ্রী দিবাকর দেবনাথ সাধারণ সম্পাদক হেপাটাইটিস ফাউন্ডেশন অব ত্রিপুরা আগরতলা ভারত।

    অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন আগরতলা থেকে আগত হেপাটাইটিস ফাউন্ডেশন অব ত্রিপুরা’র অর্থ সম্পাদক বিমান কান্তি রায় এবং ডা. মিনাক্ষী দে টিউটর আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ।

    অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)। বিশেষ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. প্রদীপ ভৌমিক, সভাপতি, হেপাটাইটিস ফাউন্ডেশন অব ত্রিপুরা, আগরতলা, ইন্ডিয়া।

    উল্লেখ্য, হেপাটাইটিস ফাউন্ডেশন অব ত্রিপুরার সভাপতি ডা. প্রদীপ ভৌমিককে ত্রিপুরা রাজ্যে হেপাটাইটিস নির্মূলে তার যুগান্তকারী সাফল্যের জন্য ফোরাম ফর দি স্টাডি অব দি লিভার বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে এফএসএলবি সম্মাননা প্রদান করা হয়।

    অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফোরাম ফর দি স্টাডি অব দি লিভার বাংলাদেশ এর সম্মানিত চেয়ারম্যান শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী।

    অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডা. শেখ মোহাম্মদ নূর-ই-আলম (ডিউ), সহকারী অধ্যাপক, লিভার বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।

    অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সহ অন্যান্য বক্তারা হেপাটাইটিস বি’র নতুন ওষুধ ‘ন্যাসভ্যাক’ এর সাফল্য তুলে ধরেন। উল্লেখ্য, এদেশের গবেষকদের গবেষণার ফলাফললব্ধ হেপাটাইটিস বি’র নতুন ওষুধ ‘ন্যাসভ্যাক’ হেপাটাইটিস বি চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। ওষুধটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে, আর এর কার্যকরিতাও অনেক বেশি। বিশেষ করে বৈজ্ঞানিক তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী লিভার রোগ নিয়ন্ত্রণে ন্যাসভ্যাক সবচাইতে কার্যকর ওষুধ বলে প্রমাণিত হয়েছে। এরই মাঝে কিউবাসহ ল্যাটিন আমেরিকা ও আফ্রিকার একাধিক দেশে ওষুধটি বাজারজাত হচ্ছে। জাপানে বর্তমানে ন্যাসভ্যাকের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ন্যাসভ্যাক-এর রেসিপি অনুমোদন করেছেন। আশা করা যায় সহসাই বাংলাদেশে ওষুধটির ব্যাবহার শুরু হবে। ন্যাসভ্যাক হচ্ছে বাংলাদেশে ডেভলপ করা প্রথম ওষুধ যা বাংলাদেশে রেজিষ্ট্রেশন পেয়েছে।

    অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর কল্যানে স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরেন, বিশেষ করে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের ভূয়সী প্রশংসা করেন। প্রধান অতিথি লিভার বিষয়ক সকল রোগ প্রতিরোধ ও নির্মূলের ক্ষেত্রে ফোরাম ফর দি স্টাডি অব দি লিভার বাংলাদেশ কে সার্বিক সহযোগিতার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

    বিশেষ অতিথি মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল এমপি তার বক্তব্যে ২০৩০ সালের মধ্যে হেপাটাইটিস নির্মূলের আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, হেপাটাইটিস এর স্ক্রিনিং টেস্ট সবার করা উচিত। এছাড়া তিনি হেপাটাইটিস বি’র নতুন ওষুধ ‘ন্যাসভ্যাক’ কে বাংলাদেশে বাজারজাতকরণের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং আশা করেন, অচিরেই ন্যাসভ্যাক বাংলাদেশের হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত রোগীরদের হাতে পৌঁছে যাবে।

    হেপাটাইটিস ফাউন্ডেশন অব ত্রিপুরার সভাপতি ডা. প্রদীপ ভৌমিক বলেন, ত্রিপুরার সাথে বাংলাদেশের আত্মার সম্পর্ক। হেপাটাইটিস রোগ ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশে একই ভাবে ছড়িয়েছে। ২০০২ সাল থেকে হেপাটাইটিস ফাউন্ডেশন অব ত্রিপুরা হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে। ডা. প্রদীপ ফোরাম ফর দি স্টাডি অব দি লিভার বাংলাদেশ এর সাথে যুক্তভাবে কাজ করার আশা ব্যক্ত করেন।

    বিএম/এমআর