নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থেকে ৫ আসামিকে ছিনিয়ে নিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা

    শরীয়তপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে আটকে রেখে আটককৃত পাঁচ আসামিকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটিয়েছেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা আক্তারের স্বামী এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সিকদার।

    মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে এ ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মোস্তফা সিকদারের ছোট ভাই সুমন সিকদাকরকে আটক করেছে পুলিশ।

    নড়িয়া থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছিলেন নড়িয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা আক্তারের স্বামী এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সিকদার। তখন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নড়িয়া উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার রাশেদুজ্জামান আট ব্যক্তিকে আটকসহ একটি খননযন্ত্র জব্দ করেন।

    দুপুর আড়াইটার দিকে আসামিদের নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দল নড়িয়া লঞ্চঘাট এলাকায় পৌঁছালে মোস্তফা সিকদার ও তার ভাই সুমন সিকদারের সমর্থকরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওই দলকে আটকে রেখে পাঁচ আসামিকে ছিনিয়ে নেয়। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা সিকদারকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলে তিনি পালিয়ে যান। এ সময় পুলিশ তার ভাই সুমন সিকদারকে আটক করে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদীর ভাঙন ঠেকাতে নড়িয়া লঞ্চঘাট এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। সেই জিও ব্যাগ ফেলার ঠিকাদারি কাজটি করছেন মোস্তফা সিকদার। তিনি ওই কাজে ব্যবহারের বালু অবৈধভাবে পদ্মা নদী থেকে উত্তোলন করছিলেন।

    এ ব্যাপারে মোস্তফা সিকদারের স্ত্রী এবং নড়িয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সাথে যুক্ত নন। তিনি নড়িয়া লঞ্চঘাট এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ করছেন।’ ওই সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলে তিনি দৌড়ে পালিয়ে যান। তবে মোস্তফা সিকদারের মুঠোফোনে কল দিলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

    এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘নড়িয়ায় পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলন করার সময় একটি খনন যন্ত্র জব্দ করা হয়। এ কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে আটজনকে আটক করা হয়েছিল। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ওই খননযন্ত্র এবং আটক ব্যক্তিদের ছিনিয়ে নেয়। সে প্রতিনিয়ত পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীমের রেফারেন্স দিচ্ছিল আর আমাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছিল। পরবর্তীতে তাকে আটক করার নির্দেশ দিলে সে পালিয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে মামলা করা হবে।’

    নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মঞ্জুরুল হক আকন্দ বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। আর ওই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

    বিএম/এমআর