ব্যাটারির কেমিক্যাল রিঅ্যাকশনে তিন মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যু: পুলিশ

    আইপিএসের ব্যাটারির কেমিক্যাল রিঅ্যাকশনে অক্সিজেন নিতে না পেরে দম বন্ধ হয়ে চাঁদপুরে তিন মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।

    এ ঘটনায় মতলব থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। আজ শনিবার (৩১ আগস্ট) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির এ তথ্য জানান।

    শুক্রবার (৩০ আগস্ট) জুমার নামাজের পর মতলবের পূর্ব কলাদি জামে মসজিদের ইমাম জামাল উদ্দিনের কক্ষ থেকে তার ছেলে আব্দুল্লাহ (৮), ভাঙরপাড় মাদ্রাসার নূরানি তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র মতলবের দশপাড়া এলাকার ইব্রাহিম (১২) ও মতলবের নলুয়া এলাকার জসিম উদ্দিনের ছেলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র রিফাত হোসেনের (১৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

    নিহত তিন মাদ্রাসাছাত্র

    পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক ধারণা, ওই কক্ষে যে আইপিএসের ব্যাটারি ছিল সেটা থেকে কোনও কারণে কেমিক্যাল রিঅ্যাকশন হয়েছে। ফলে ওখানে হাইড্রোজেন সালফাইড বা অন্য কোনও কেমিক্যালের উৎপাদন বা কার্বন-ডাই অক্সাইড উৎপাদন বেশি হয়ে যায়। তখন রুমের ভেতর অক্সিজেনের ঘাটতি তৈরি হয়। এ অবস্থায় ঘরের মধ্যে থাকলে ব্রেন অচেতন হয়ে পড়তে পারে। তবে এটি আমাদের প্রাথমিক ধারণা। সিআইডিও আমাদের এমন একটি প্রাথমিক ধারণা দিয়ে গেছে।’

    তিনি বলেন, ‘অবস্থা দেখে মনে হয়েছে দম বন্ধ হয়ে তারা মারা গেছে। এটা হওয়া সম্ভব কিনা সেটি দেখার জন্য আমাদের সিআইডি টিম এসেছিল। বিভিন্ন স্যাম্পল কালেক্ট করা হয়েছে। বাতাস সংগ্রহ করা হয়েছে, বাতাসের কেমিক্যাল অ্যানালাইসিস করা হবে। তবে আমরা যদি কোনও পূর্বানুমান দাঁড় করাই, দেখা যাবে এ ঘটনা সম্ভব।’

    পুলিশ সুপার বলেন, ‘সিআইডি থেকে ক্রাইম সিন অ্যানালাইসিস টিম এবং ফরেনসিক টিম এসে প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করেছে। তারা ঢাকায় গিয়ে সেগুলো পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেবে। এছাড়া পোস্টমর্টেম হয়েছে। সেখান থেকে যে যে পার্টসগুলো কালেক্ট করা দরকার আমরা সে জিনিসগুলো নিয়ে কেমিক্যাল এক্সাম করবো। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসার পর সংশ্লিষ্ট সব বিষয় পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্তে আসা যাবে। জেলা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই-ও এ ঘটনা নিয়ে কাজ করছে।’

    এসপি বলেন, ‘ঘটনাস্থলে একটি রুমের ভেতর ছিল তিনটি শিশু। ভেতর থেকে দরজা বন্ধ ছিল। তাই বাইরে থেকে কোনও কিছু প্রবেশ করার সুযোগ ছিল না। সেক্ষেত্রে যা হয়েছে ভেতরেই হয়েছে। তিনজনকে অচেতন অবস্থায় ওই কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।’

    পুলিশ সুপার বলেন, ‘একটি ঘটনা ঘটলে বিভিন্ন রকমের কথা আসে। তারা যদি এসিড পানি পান করতো তাহলে তাদের মুখে দাগ থাকতো, জিহ্বা পুড়ে যেত। যদি কোনও বিষক্রিয়া হতো তাহলে তাদের শরীরে একটি পরিবর্তন আসতো। কিন্তু মনে হচ্ছে তারা ঘুমিয়ে আছে। শরীরের কোথাও কোনও দাগ নেই।’

    এদিকে মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্বপন কুমার আইচ জানিয়েছেন, তিন ছাত্রের মরদেহ যে কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সেখানে তিনটি ব্যাটারি ছিল। যেগুলো দিয়ে আইপিএস এবং সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হতো।

    বিএম/এমআর