রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সরকারকে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে

    বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধান করতে হলে সরকারকে অবশ্যই জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।

    তিনি বলেন, সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে মিয়ানমারের ফাঁদে পা দিয়েছে সরকার।

    বুধবার (২৮ আগস্ট) বিএনপি আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সংকট ও বাংলাদেশের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। বিকেল চারটায় রাজধানীর গুলশানের হোটেল লেকশোরে এ গোলটেবিল বৈঠক শুরু হয়।

    মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মিয়ানমার সরকার তাদের পররাষ্ট্র নীতিতে সবসময় অটল থেকেছে, কিন্তু বাংলাদেশ অটল থাকতে ব্যর্থ হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই বলেও জানান তিনি।

    বিএনপি মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে আমাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকসহ নানা ধরনের সমস্যা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের বাসস্থান, ভূমির মালিকানা ফিরিয়ে দেয়া, নাগরিকত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশগুলোসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।

    বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদের সঞ্চালনায় বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

    আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহাবুব উল্লাহ বলেন, ‘চীন, মিয়ানমার ও ভারত এই তিন দেশের মধ্যে কূটনৈটিক সম্পর্ক জোরদার করা ছাড়া রোহিঙ্গা সংকট সমাধান করা যাবে না। চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে অনেক ভালো সম্পর্ক। চীনের অনেক বিনিয়োগ রয়েছে মিয়ানমারে। বিশ্বকে বুঝাতে বাংলাদেশ কিভাবে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’

    সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা প্রথম যখন এসেছিলেন, তখন জিয়াউর রহমান সফলভাবে তাদের ফেরত পাঠিয়েছিলেন। খালেদা জিয়ার সময়েও তিনি ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমার সরকার কিছুই করতে পারছে না।’

    তিনি বলেন, ‘ভারত এখনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে, কিন্তু তারা তা করছে না। তাদের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু আমাদের কূটনৈতিক দুর্বলতা রয়েছে। এটাই উপযুক্ত সময় রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে কাজ করার।’

    গোলটেবিল বৈঠকে নরওয়ে, ভারত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, সুইডেন, আফগানিস্তান, চায়না, জাতিসংঘ, সুইজারল্যান্ড, পাকিস্তান, কানাডা, অষ্ট্রেয়িলা ফ্রান্স, তুরস্ক সহ বেশ কিছু দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

    এতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ আহমেদ, প্রফেসর দিলারা চৌধুরী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজ, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এডভোকেট আহমেদ আযম খান, নিতাই চন্দ্র রায়, ডা. এ জেড এম জাহিদ, বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়ুয়া, সুপ্রীম কোর্ট বারের সভাপতি এডভোকেট জয়নুল আবেদীন, যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ উপস্থিতি ছিলেন।

    বিএম/এমআর