বাংলাদেশের নদী ব্যবহারের মহাপরিকল্পনা ভারতের

    বাংলাদেশ মেইল: ভারতের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়,হিন্দুস্তান পেট্রোক্যামিক্যালস ও আদানি উইলমারের ৫৩টি কনটেইনার নিয়ে চলতি সপ্তাহে গৌহাটির উদ্দেশে কলকাতার হালদিয়া বন্দর ত্যাগ করবে জাহাজ এমভি মহেশ্বরী। জাহাজ চলাচল সচিব গোপাল কৃষ্ণ জাহাজটির যাত্রা উদ্বোধন করবেন। ১২ থেকে ১৫ দিনের যাত্রায় এটি ১ হাজার ৪৮৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবে। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে এটি ভারত-বাংলাদেশ নদী বাণিজ্য রুট অতিক্রম করবে।

    উত্তরপূর্বের দক্ষিণাংশ তথা আগরতলা থেকে সাগরে প্রবেশের সুযোগ কানেকটিভিটিকে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা। আগরতলা থেকে সাগর মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরে। যা বাংলাদেশ দ্বারা বিচ্ছিন্ন।এই অংশের চাবি বাংলাদেশের হাতে।

    প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসের প্রথম দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লি সফরের সময় এ ব্যাপারে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা অপসারণের সক্রিয় প্রয়াস চালানো হয়। কলকাতা থেকে ঢাকার কাছে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত ক্রমবর্ধমান ইন্দো-বাংলাদেশ বাণিজ্যের জন্য ব্যবহৃত গাঙ্গেয় নেটওয়ার্ক উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন পয়েন্ট পর্যন্ত সম্প্রসারিত হতে পারে। এসবের মধ্যে রয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে (বাংলাদেশে যমুনা) আসামের মধ্যভাগে থাকা সিলঘাট এবং কুশিয়ারা নদী দিয়ে রাজ্যটির দক্ষিণে করিমগঞ্জ। এসব রুট ইন্দো-বাংলাদেশ প্রটোকল ফর ইনল্যান্ড ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেডের (আইবিপিআইটিটি) অংশবিশেষ। তবে নানা সমস্যার কারণে এসব রুট অব্যবহৃতই থেকে গেছে। এগুলোতে নতুন জীবন সঞ্চারের উদ্যোগ হাতে নেয়া হয়েছে। আগরতলাকে সড়কপথে চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

    বাংলাদেশ প্রধানত নদী রুটে ভারত থেকে ফ্লাই অ্যাশ আমদানি করে। বর্তমানে ভারত থেকে আসা কার্গোগুলো নারায়ণগঞ্জ ও খুলনায় আসে নদীপথে। এখানকার নদী বন্দরগুলো পাট ও সিমেন্ট কারখানার জন্য প্রাণবন্ত থাকে।

    নদীপথে বাণিজ্যে মাত্র একটি পণ্যের আধিপত্য থাকায় ও গন্তব্য কেবল নারায়ণগঞ্জ হওয়ায় একটি বিষয় পরিষ্কার, নয়াদিল্লি উত্তরপূর্বের সম্ভাবনাপূর্ণ ট্রানজিট হিসেবে ১৯৭২ সালের ইন্দো-বাংলাদেশ প্রটোকল (আইবিপি) রুটগুলো সম্প্রসারণ করতে সক্ষম হয়নি। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে উত্তরপূর্বে এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে বাণিজ্যের প্রধান বাধা হলো নদীর গভীরতা কম। এজন্য প্রয়োজন ড্রেজিং। বর্তমানে কুশিয়ারা নদীতে সিরাজগঞ্জ থেকে জকিগঞ্জ পর্যন্ত (২৯৫ কিলোমিটার) ড্রেজিং চলছে। এই কাজ শেষ হবে ২০২১ সালে।

    বিকল্প প্রতিরক্ষা রুট প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ভারত সব সময়ই জরুরি প্রয়োজনে সৈন্য ও ট্যাংক চলাচলের জন্য বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে বিকল্প রুট সৃষ্টির আকাঙ্খা লালন করে আসছে। আইডব্লিউএআইয়ের চেয়ারপারসন অমিত প্রাসাদ বলেন, আইবিপি রুটের মাধ্যমে ট্রানজিটের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি বেশ আশাবাদী।