বাংলাদেশ মেইল ::
চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় পাইকারী ঔষধের মার্কেট হাজারী গলিতে বসেছে ত্রিশটির বেশি ভাম্রমান দোকান। এসব দোকানে নকল স্যাভলন, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ করোনাকারের বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে দেদারসে।
সরেজমিনে হাজারী গলি ঘুরে দেখা যায় দামে কম হবার কারনে সাধারন মানুষ ভাম্রমান এসব দোকান থেকেই কিনে নিচ্ছে স্যাভলন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক। এসব পন্যের অধিকাংশই নকল।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতিটি দোকানের কাছ থেকে পুলিশ নিচ্ছে ২০০ টাকা করে। প্রশাসনের নজরদারি না থাকার কারনে এসব ভাম্রমান দোকান থেকে পন্য সামগ্রী ক্রয় করে প্রতারিত হচ্ছেন সাধারন মানুষ। নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের কারনে বাড়ছে করোনা ঝূঁকিও।
আনিস নামের ভাম্রমান দোকানীর কাছে জানা গেলে নগরীর রেয়াজউদ্দিন বাজার থেকে এসব পন্য এনে হাজারী গলির গুদামে মজুদ করে কিছু স্থানীয় যুবক। তারাই এসব পন্য বিক্রির ভাম্রমান দোকান বসিয়েছে এলাকা জুড়ে। সে জানায় দৈনিক ভিক্তিতে কাজ করে প্রত্যেকেই। মুলত দোকানদার ভিন্ন কেউ। পুলিশের চাঁদা কে সংগ্রহ করে এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে চায় না সে। বলে ‘আপনারাই খবর নেন। ‘
অনুসন্ধানে জানা যায় স্থানীয় যুবক রানা, সাজু, নরেন, সালাউদ্দিন, রোপনের নাম৷ মুলত এরাই নকল পন্যের এসব ভাম্রমান দোকান বসিয়েছে পুলিশের সহযোগিতায়।
হাজারী গলির ছবিলা কমপ্লেক্সের ৫ তলায় গিয়ে পাওয়া গেলো সালাউদ্দিনের গুদাম। কোন নাম না থাকলেও সবাই সালাউদ্দিনের দোকান হিসেবেই চেনে। দোকানের সামনে পন্য সংগ্রহ করতে এসেছে ৪ জন ভাম্রমান ব্যবসায়ী। প্রতিবেদককে দেখেই সটকে পড়ে তারা। তাদের পিছু নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে পুনরায় ৫ ম তলা উঠার পর দোকানটি খোলা পাওয়া যায়নি।
সুত্র বলছে, হাজারী গলিতে ৩০-৪০ টি ভাম্রমান দোকানে দৈনিক ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকার নকল পন্য বিক্রি করছে চক্রটি। কোন কোন দোকানে বিক্রি হচ্ছে ঔষধও৷ এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ ঔষধ এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সাধারন সম্পাদক আশীস ভট্টাচার্যের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ ঔষধ দোকানদাররা এসবের সাথে জড়িত নয়। মুলত ফুটপাতের এসব দোকানের সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা কোথা থেকে এসব নকল পন্য যোগাড় করে সেটিও জানা নেই। যেহেতু ভাম্রমান দোকানে অভিযান হয় না এ কারনে তাদের দিয়েই নকল পন্য বিক্রি করছে একটি চক্র।কারন প্রশাসনের অভিযান ঔষধের দোকানে হয়। ভাম্রমান দোকানে সাধারনত হয় না। ‘
এ বিষয়ে ওসি কোতোয়ালী মোহাম্মদ মহসিন ও স্থানীয় কাউন্সিলরকেও বিভিন্ন সময়ে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার (২৩ জুন) নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফুটপাতের দোকানে নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার, স্যাভলনের সন্ধান পায় ভাম্রমান আদালত। এসব নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ধ্বংস করে জেলা প্রশাসনের ভাম্রমান আদালত। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান এ অভিযান পরিচালনা করেন।
জানতে চাইলে তিনি জানান, নগরীর হাজারী গলিতে ভাম্রমান দোকান দেখা গেছে। এসব দোকানের পন্য যাচাই করে দেখা হয়েছে। অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে৷ এসব নকল পন্য সরবরাহকারীদের বিষয়েও খোঁজ নেয়া হবে।