মুনসুরাবাদে সড়ক ও জনপথের ৮ কোটি টাকা মূল্যের জমি বেদখল

    মাহফুজুর রহমান ::

    সরকারি নজরদারির অভাবে চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানাধীন মুনসুরাবাদ এলাকায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রায় ৮ কোটি টাকা মূল্যের জমি দখলে নিয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। জায়গাটি ১১ ফেব্রয়ারি ১৯৫৪ সালে সরকারি গেজেট ভুক্ত হয়।

    আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দখলকৃত জায়গায় দেয়াল নির্মাণ করতে দেখা যায়। স্থানীয়রা জানান,৪নং খতিয়ানভুক্ত বিএস দাগের ৭১৯৬ জমিটিতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কর্মচারীদের বাসা বাড়ি ও স্টেক ইয়ার্ড রয়েছে।জায়গাটিতে নিজের মালিকানা দাবি করে জনৈক ইউসুফ ও শফিকুল ইসলাম ২০১২ সালের ২১ অক্টোবর একটি মামলা রুজু করেন।মালিকানা দাবি করা দুই ব্যক্তি স্থানীয় খাদেমুল ইসলাম বাড়ির নিবাসী ।গত ৫ অক্টোবর সকালে স্টেক ইয়ার্ডের গেইটের তালা ভেঙ্গে প্রবেশ  সংঘবদ্ধ দলটি। এসময় তাদের সড়ক ও জনপথের স্টেক ইয়ার্ডের সাইনবোর্ড ভেঙ্গে নিয়ে যেতে দেখা যায়।সাইনবোর্ড ভাঙ্গার সময় মারধরের শিকার হন সড়ক ও জনপথের গাড়িচালক মোঃ শাহজাহান। জায়গাটি দখলে নেওয়ার সময় চট্টগ্রামের এম ই এস কলেজ ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীর উপস্থিতির কথা প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছে স্থানীয়রা।

    সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়,সহকারী জজ চট্টগ্রাম দ্বিতীয় আদালত থেকে কৌশলে একতরফা রায় নেন মোহাম্মদ ইউসুফ ও শফিকুল ইসলাম।তারা স্থানীয় একটি মাজারের খাদেম । বিষয়টি সড়ক ও জনপথের কর্মকর্তাদের নজরে আসলে চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালতে আপিল মামলা (মামলা নং-২৭/২০২০) দায়ের করে সওজ অধিদপ্তর।ফলে মামলার বাদীরা এ জমিটিতে নামজারি খতিয়ান সৃজন করতে ব্য়র্থ হয়।কিন্তু মামলার বাদী ইউসুফ ও শফিক জায়গাটির আমমোক্তারনামা প্রদান করেন হাক্কানী এন্টারপ্রাইজের জনৈক সিরাজকে।সিরাজ দলবল নিয়ে জায়গাটিতে দেয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন।যদিও ৩ অক্টোবর সকালে সিরাজের সাথে আলাপকালে সে প্রতিবেদককে জানিয়েছিল আদালতের আপিল মামলা চলাকালীন সময়ে জায়গাটিতে কোন স্থাপনা নির্মাণ এবং জায়গাটি দখল করবেনা।

    জানতে চাইলে সিরাজ জানায়,পাওয়ারমূলে জায়গাটির মালিক তিনি। ভুলক্রমে বিএস জরিপে জায়গাটি সড়ক ও জনপথের নামে তালিকা ভুক্ত হয়েছে । আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে কাজ করার কথাও জানান তিনি।

    এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ জানান,আরএস দাগের ৭১৭৭ নং ভূমিটি এলএ মামলা মামলা নং ১৭-৫২/৫৩ মূলে ১৯৫৪ সালে অধিগ্রহণ করা হয়েছিল । আর এস জরিপ অনুযায়ী ভূমিটির মালিক সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। একতরফা মামলার রায় সংগ্রহ করে সরকারী ভূমিটি দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার(৮ অক্টোবর) নগরীর ডবলমুরিং থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করার কথাও জানান তিনি।

    এদিকে চট্টগ্রামের মুনসুরাবাদস্থ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ভূমি দখলের বিষয়ে বার বার ডবলমুরিং থানাকে অবহিত করা হলেও পুলিশ কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ ।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের এক কর্মকর্তা জানান,বেদখল হওয়া ভূমির আনুমানিক বর্তমান বাজারমূল্য  ৮ থেকে সাড়ে ৮ কোটি টাকা।