স্বাস্থ্য বিধি মানতে নারাজ যাত্রীরা
    তীব্র যানজটে অরক্ষিত মহাসড়ক, করোনা পরিস্থিতিকে ফেলেছে ঝুঁকিতে

    সাইফুল আলম, বাংলাদেশ মেইল ::

    লকডাউনের ঘোষণায় রাজধানী ঢাকা থেকে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগে পড়েছে অতিরিক্ত চাপ।  ঢাকা  চট্টগ্রাম মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের কারণে দূর্ভোগে পড়েছে ঘরমুখো যাত্রীরা।

    সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস শেষে তড়িঘড়ি করে রাজধানী ঢাকা ছেড়েছেন অনেকেই।তাই বিকাল থেকে বাস টার্মিনালগুলোতে  ছিল অন্য দিনের চেয়ে অনেক ভিড়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সোমবার থেকে লকডাউন শুরুর আগে একই কারণে সদরঘাটেও ছিল বিপুল যাত্রীর চাপ।

    বাড়ির যাওয়ার তাড়ায় রোববার বাস স্টেশন বা লঞ্চ টার্মিনালে ভিড়ের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে সামাজিক দূরত্ব মানার নিয়ম মানার সুযোগই ছিল না। ভিড়ের মধ্যেই কেউ বাসের অপেক্ষায় ছিলেন, কেউবা টিকিটের খোঁজে এক কাউন্টার থেকে অন্য কাউন্টারে ঢু মেরেছেন।

    লকডাউন আসছে এমন খবরে রাজধানী ছাড়ার হিড়িক পড়ে মানুষের মধ্যে। লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে আটকে পড়ার ভয়ে ঢাকা ছাড়ছেন এসব মানুষ। সড়ক, ফুটপাতে মানুষ চলাচল অনেক গুণ বেড়েছে।

    লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যাবে- এমন আশঙ্কায় রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনালে দেখা গেছে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়।  রবিবার (৪ এপ্রিল) সকাল থেকেই দলে দলে মানুষকে দেখা গেছে গ্রামের উদ্দেশে রওনা হতে।

    গতকাল সন্ধ্যা থেকেইঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশ তীব্র  যানজটের সৃষ্টি হয়।  একপর্যায়ে এ জট প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত হয়। একই মহাসড়কের চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে গতকাল সন্ধ্যা  থেকে যানজট শুরু হয়। ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর অংশেও ব্যাপক যানজট ছিল গতকাল দিনভর। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ে যাত্রীরা।

    সড়কের মতো একই অবস্থা দেখা গেছে নৌপথেও। গতকাল শনিবার সন্ধ্যার পর রাজধানী ছেড়ে যাওয়া মানুষের ঢল নামে লঞ্চ টার্মিনালে। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে লকডাউন ঘোষণা দেয়া হলেও অপরিকল্পিত  পরিবহন ব্যবস্থা ও পরিবহন  সংকটে যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড় কার্যত করোনা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ করে তুলতে পারে – বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

    নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে মালবাহী কার্গোর ধাক্কায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি লঞ্চ ডুবে যায় । রবিবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জে যাওয়ার পথে সৈয়দপুরের কয়লা ঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা সেতুর নিচে লঞ্চটি ডুবে যায়। বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা বলছেন বাড়তি যাত্রীর কারনে নয় কার্গোর ধাক্কায় এ দূর্ঘটনা ঘটেছে।

    পুলিশ সদর দফতরের এক কর্মকর্তা জানান, লকডাউন কার্যকর করতে আগের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সরকারের পক্ষ থেকে যেভাবে লকডাউন কার্যকর করতে বলা হয়েছে সেভাবেই মাঠের পুলিশ সদস্যদের নির্দেশনা দেওয়া হবে। বিশেষ করে চলাচলে কতটা কড়াকড়ি করা হবে তা নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিপালন করা হবে। এছাড়া রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন জেলা শহরের প্রবেশমুখ ও বের হওয়ার রাস্তাগুলোতে চেকপোস্ট বসানো হবে। যাতে শহরের ভেতরে অকারণে সাধারণ মানুষের প্রবেশ ও বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সামাজিক দুরত্ব রক্ষার পাশাপাশি  মাস্ক পরিধান করার উপর গুরুত্ব দেয়ার কথা বলা হলেও যাত্রীদের  ভীড়ের অভিজ্ঞতা করোনা পরিস্থিতিকে আরো উসকে দিতে পারে।