বাকলিয়ায় কবরস্থানের সাইনবোর্ড কান্ড
    মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কবরস্থান,কবরের ব্যবসা করেন সন্ত্রাসী চক্র

    বাংলাদেশ মেইল ::

    চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানা এলাকায় কবরস্থানের জায়গায় নতুন সাইনবোর্ড দেওয়াকে কেন্দ্র করে  সংঘর্ষের ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃস্টি করলেও এ ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে একটি সন্ত্রাসী চক্রের কবর বাণিজ্য।

    শুক্রবার (১১ জুন) জুমার নামাজের আগে এ সংঘর্ষ হয়। মুহুর্মুহু গুলির শব্দে প্রকম্পিত চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ার পুরো এলাকা। এসময় কবরস্থানের জায়গা দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তের জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন চারজন।

    অনুসন্ধানে জানা যায় বাকলিয়া থানাধীন ১৮ নং ওয়ার্ডের পূর্ব বাকলিয়া আবদুল লতিফ হাটখোলা এলাকায় অবস্থিত বড় মৌলবী বাড়ি কবরস্থানের জায়গাটি পৈতৃক সুত্রে মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও আহমদ ইলিয়াসের। মোহাম্মদ ইব্রাহিম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রথম নির্বাচিত জিএস ছিলেন। ২০১৯ সালে চসিক থেকে একুশে সম্মাননা পান  সম্মুখ যুদ্ধে চট্টগ্রামের অকুতোভয়  বীর এ মুক্তিযুদ্ধা। ১৯৫০ সালেই মোঃ ইব্রাহিমের পারিবারিক এই জায়গাটি কবরস্থানের জন্য দান করেছিলেন তার হাজী সইদুল হক। পারিবারিকভাবে জমিটির খাজনাসহ যাবতীয় রাজস্ব দিয়ে থাকেন প্রয়াত এই মুক্তিযোদ্ধার পরিবার।

    কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই কবরস্থানে মৃত ব্যাক্তিদের কবর দেয়া নিযে একটি চক্র বাণিজ্য শুরু করে। কবর দেবার জন্য মরদেহ প্রতি ৫০/৬০ হাজার টাকা নেয় চক্রটি। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ভাই আহমদ ইলিয়াসকে অবহিত করেন। স্থানীয়দের পরামর্শ অনুযায়ী মৌলবী বাড়ি কবরস্থান হিসেবে সাইনবোর্ড স্থাপন করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হন স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনীর। ইয়াকুব বাহিনীর সদস্যরা অস্ত্র নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েন এলাকাবাসির উপর। মুহুর্মুহু গুলির শব্দে প্রকম্পিত হয় পুরো এলাকা। গুলিবিদ্ধ হন প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আবদুল্লাহ কায়সারসহ পরিবারের তিন সদস্য। আব্দুল্লাহ কায়সার লিটনের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে। চমেকের চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরে  অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। আহত অন্যদের শরীরের বিভিন্ন অংশে কাটা ছিঁড়া ও গুলিবিদ্ধের আঘাত রয়েছে।

    এসময় সংঘর্ষে অংশ নেয়া অস্ত্রসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসীর ছবি প্রতিবেদকের কাছে দিয়েছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ পুলিশ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের  না ধরে স্থানীয় নিরীহদের ধরেছেন।

    জানা যায়, এ ঘটনার নেতৃত্ব দেয়া ইয়াকুব সিএমপির তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী৷ রাজনৈতিক কোন পদপদবী না থাকলেও তার রয়েছে সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী সদস্য। মাদক মামলা, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য বিভিন্ন সময় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন ইয়াকুব। অভিযুক্ত ইয়াকুব আলী দেড় কেজি হিরোইনসহ ১৯৯৫ সালে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন।

    পত্রিকার প্রতিবেদন

    কবরস্থান দখল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায়  নগরীর বাকলিয়া থানায় ইয়াকুব আলী,আকবর আলীসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে  মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হলেও অধরাই থেকে গেছে মুলহোতা ইয়াকুল আলী। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এলাকায়।