বর্তমানে নির্বাচন জটিল অসুখে আক্রান্ত: নির্বাচন কমিশনার

জটিল অসুখে

বাংলাদেশ মেইল ::

নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, নির্বাচন এখন কতিপয় জটিল অসুখে আক্রান্ত। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় গণতন্ত্রের অবস্থা সংকটাপন্ন। একক ডাক্তারের পক্ষে তাকে বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে মেডিকেল বোর্ড গঠনের কোনো বিকল্প নেই। মৃত্যুপথযাত্রী গণতন্ত্রকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো একান্ত অপরিহার্য।

রোববার নির্বাচন কমিশনের নিজ কার্যালয়ে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার।

মাহবুব তালুকদার বলেন, গণতন্ত্রহীন নির্বাচন চাই কি না আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। গত বৃহস্পতিবার ডিএসসিসির ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনে ইভিএমে মাত্র ২০ শতাংশ ভোট পড়েছে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ছিল। কিন্তু ভোটের টার্ন আউট এত কম হওয়ায় জনগণের নির্বাচনবিমুখতা আমাকে হতাশ করে। অন্যদিকে রাসিকের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদের উপ-নির্বাচনে ইভিএমে ৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে। এ বৈষম্য আমাদের বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধির সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এর প্রতিবন্ধকতা দূর না হলে কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ হবে না। ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম নগরের ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনে জামানত হারিয়েও একজন প্রার্থী কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। স্বভাবতই ওই নির্বাচনে ২১ জন প্রার্থীর সবাই জামানত হারিয়েছেন। এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যা বিশ্বে নজিরবিহীন। আমার মতে এতে নির্বাচনে একটা নতুন ধারা সূচিত হলো।

নির্বাচন কমিশন গঠন সাম্প্রতিক ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে কমিশনার বলেন, গত ৫০ বছরে সংবিধান অনুযায়ী ইসি নিয়োগের আইন প্রণয়ন করা হয়নি। এটা বাধ্যতামূলক হলেও সব ক্ষমতাসীন সরকার এটা লঙ্ঘন করেছে। সর্বজনীন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা, জনগণের ক্ষমতায়ন ও গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা থাকলে এ আইন করা অনস্বীকার্য। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সব দলের সমঝোতা ছাড়া এ আইন করা অসম্ভব।

মাহবুব তালুকদার বলেন, আমাদের স্বাধীনতার পূর্বশর্ত ছিল গণতন্ত্র। সংবিধানের চারটি মূলনীতিতে গণতন্ত্র সন্নিবেশিত হয়েছে। স্বাধীনতার পাঁচ দশক পরেও আমরা যদি অন্ধকার ঘরে একটি কালো বিড়ালের মতো গণতন্ত্র খুঁজে ফিরি, এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে? একজন ভোটার বাড়ি থেকে বেরিয়ে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের ইচ্ছামতো ভোট প্রদান করে নিরাপদে বাড়ি ফিরে আসবে, বাংলাদেশ রাষ্ট্র কি এটা পূরণ করতে পারবে না?