পটিয়ায় কাউন্সিলরের সহযোগিতায় রোহিঙ্গা হয়ে গেলো বাংলাদেশি

পটিয়া প্রতিনিধি:

পটিয়ায়  রোহিঙ্গা নাগরিককে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পেতে সহায়তার অভিযোগ ওঠেছে এক জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে । পটিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আবদুল খালেকের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী এমন অভিযোগ তুলেছেন।

গতকাল (বুধবার) সকালে স্থানীয় লোকজন গণস্বাক্ষর সম্মেলিত একটি লিখিত অভিযোগ পটিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন।

রোহিঙ্গা নাগরিক আলী হোসেন বর্তমানে সৌদি আরবে রয়েছেন। পিতা আবদুর রহিম ও মাতা মৃত মাহমুদা খাতুন কেউই স্থানীয় বাসিন্দা নন। পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর খালেকের সুপারিশে এবং তথ্য গোপন করে এনআইডি কার্ড পেয়েছেন তিনি।

জালিয়াতির মাধ্যমে কাউন্সিলরের সনদ পেয়ে তা প্রদর্শন করে পাসপোর্টও সংগ্রহ করেছেন । ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট নির্বাচন অফিস রোহিঙ্গা নাগরিককে পটিয়া নির্বাচন অফিস এনআইডি কার্ডটি প্রদান করেন। এনআইডি নং- ৬৪৬৩৬৪২৭২৫। জন্ম তারিখ ১৯৬৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর।

অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের পর দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়াতে অসংখ্য রোহিঙ্গা ছড়িয়ে রয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে জন্মনিবন্ধন, জাতীয় সনদ ও প্রত্যায়ন পত্র নিয়ে গোপনে ভোটার হয়। অনেকে পার্সপোর্ট করে বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিয়েছেন ৷ পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও, পৌর সদরের কাগজীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় তাদের বসতি রয়েছে। এসব রোহিঙ্গারা জন্মসুত্রে মায়ানমারের নাগরিক হলেও স্থানীয়ভাবে তারা বিয়ে করে আত্মীয়তা করেন। এরপর জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে এনআইডি কার্ড তৈরি করান।

পটিয়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের নুর আহমদ সওদাগর বাড়ির দক্ষিণ বিল এলাকার রোহিঙ্গা আলী হোসেন বিয়ে করে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। পৌরসভার কাগজীপাড়ায় রোহিঙ্গা নাগরিক ভোটার হওয়ার বিষয়টি ফাঁস হলে এলাকার লোকজন প্রতিক্রিয়া দেখান। পটিয়া পৌরসভা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, রোহিঙ্গারা বিভিন্নভাবে সনদ সংগ্রহ করে পাসর্পোট বানিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। যার কারণে দেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তপুর্বক
আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

পটিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, রোহিঙ্গা নাগরিক ভোটার হওয়ার বিষয়ে স্থানীয় লোকজন আমাকে ইতোপূর্বে একাধিকবার জানিয়েছেন। তবে কিভাবে সনদ পেয়েছেন তা আমি জানি না। সাবেক কাউন্সিলর আবদুল খালেক থেকে সনদটি গ্রহণ করেছেন।

পটিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আরাফাত আল হোছাইনী বলেন , রোহিঙ্গা নাগরিক ভোটার হওয়া সংক্রান্তে একটি অভিযোগ স্থানীয় লোকজন পটিয়া নির্বাচন অফিসে জমা করেছেন। বিষয়টি তদন্তপূর্বক সত্যতা পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।