ফ্রান্স-ভারতের ব্লু ইকোনমি ও ওশান গভর্নেন্স রোডম্যাপ

বাংলাদেশ মেইল ::

সাগর ব্যবস্থাপনা ও অবস্থান নিশ্চিতকরণ এবং ব্লু ইকোনমি তথা নীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক, অর্থনৈতিক, অবকাঠামোগত এবং বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে একটি বিস্তৃত রোডম্যাপ প্রণয়ন করতে সম্মত হয়েছে ভারত ও ফ্রান্স। গত ২০ ফেব্রুয়ারী, রবিবার, প্যারিসে উভয় রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরবর্তীতে ভারতীয় পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে তথ্যটি নিশ্চিত করা হয়েছে।

জানা গিয়েছে, আলোচনাকালে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, গবেষণা ও উদ্ভাবন, শক্তি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো খাতে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করতে সম্মত হোন উভয় মন্ত্রী। এরই অংশ হিসেবে মূলত ‘ব্লু ইকোনমি অ্যান্ড ওশান গভর্নেন্সের ভারত-ফ্রান্স রোডম্যাপ’ গ্রহণ করেছে দেশ দুটো। এসবের পাশাপাশি ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক খাতেও সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে একমত হয়েছে দু পক্ষ।

বৈঠক শেষে আফগানিস্তান ও ইউক্রেন সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক মঞ্চে যৌথভাবে কাজ করার বার্তা দেন জয়শংকর ও জঁ-ইয়েভেস। আন্তর্জাতিক মঞ্চে বহুত্ববাদের নীতি ও নিয়মভিত্তিক শৃঙ্খলা মেনে বিভিন্ন ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে সহমত প্রকাশ করেন দুজনে।

এর আগে, গত শনিবার মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স ২০২২-এ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে তিনি সরাসরি জানিয়ে দেন, চীনের সঙ্গে ভারতের একটি সমস্যা রয়েছে। একইসঙ্গে, ইন্দো-প্যাসিফিক, আফগানিস্তান ও ইউক্রেন নিয়েও ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করেন তিনি। বিশ্লেষকদের মতে, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মঞ্চে নিজের জায়গা আরও মজবুত করতে সচেষ্ট হয়েছে নয়াদিল্লি।

এছাড়া, ইন্দো প্যাসিফিক রিজিয়নে সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও কথা বলেন জয়শঙ্কর ও ফরাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিকে ফ্রান্স ভারতের অন্যতম স্ট্র্যাটেজিক অংশীদার। সেক্ষেত্রে ভারতে সম্ভাব্য এয়ারক্রাফট তৈরি নিয়েও দুপক্ষের মধ্যে কথা হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে বোদ্ধামহল। পাশাপাশি ইউরোপে থাকা ভারতীয় রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গেও প্যারিসেই আলোচনায় বসতে পারেন জয়শঙ্কর। একই সঙ্গে, আগামী ২২ ফেব্রুয়ারী থেকে ইইউ ফোরামের সহযোগিতায় যৌথভাবে ইন্দো-ফ্রান্সের ‘ইন্দো-প্যাসিফিক পার্কস পার্টনারশিপ’ শুরু হতে যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, তিনদিনের সফরে বর্তমানে ফ্রান্সে রয়েছেন জয়শঙ্কর। সাম্প্রতিক ইউক্রেন-রাশিয়া সঙ্কটে চাপে পড়েছে ভারত। কেননা, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক ও অত্যন্ত মজবুত। সোভিয়েত জমানা থেকেই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে রুশ অস্ত্রের বড় খদ্দের ভারত। দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্কও অত্যন্ত শক্তিশালী। সেই সম্পর্ক কিছুতেই নষ্ট করতে চায় না মোদি সরকার। তাই আমেরিকা সুর চড়ালেও এখনও ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করেনি ভারত। অন্যদিকে, অস্ত্র আমদানি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক ভাল। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক