শাবিতে চালু হলো শিক্ষার্থীদের জন্য প্রথম চাইনিজ কর্ণার

বাংলাদেশ মেইল ::

চীনের সংস্কৃতি ও চীনের আন্তর্জাতিক প্রভাব সম্পর্কিত বিভিন্ন গবষেণাপত্র নিয়ে দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথমবারের মতো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) চাইনিজ কর্ণার চালু হয়েছে।

বুধবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটরিয়ামে এই কর্ণারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। বাংলাদেশে অবস্থিত চায়না দূতাবাসের কালচার এন্ড এডুকেশন অ্যাফিয়ার্সের কাউন্সিলর মি. লিউয়েন ইউ অনলাইনে এই কর্নারের উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠনে অনলাইনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

শাবিপ্রবিতে চায়নিজ কর্নার চালুতে সহযোগিতা করায় চীনের দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এটি হচ্ছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি ভালো উদ্যোগ, আশা করি এ কর্নার থেকে পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের পাশাপাশি অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরাও উপকৃত হবেন। এ কর্নারকে এগিয়ে নিতে পারস্পরিক সহযোগিতা মাধ্যমে আমরা দ্বিপাক্ষিকভাবে কাজ করে যাবো।

এছাড়া চীন এ অঞ্চলের শিক্ষা ও সংস্কৃতি উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। আমাদের দেশ থেকে প্রতি বছর প্রচুর শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার জন্য চীনে যাচ্ছে এবং উচ্চ শিক্ষা শেষে ফিরে এসে তারা দেশের উন্নয়নে অবদান রাখছে। ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিতে চীনকে আরো বেশি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান উপাচার্য।

উপাচার্য আরো বলেন, আমাদের দেশের উন্নয়নে চীন সরকারের অবদান রয়েছে। তারা আমাদের দেশের বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে চীন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এবং ভবিষ্যতে সকল দেশকে টপকে চীন বিশ্ব অর্থনীতিতে শীর্ষ অবস্থানে চলে যাবে। চীন থেকে আমরা বিভিন্ন জিনিস আমদানি করি। চীনের বানিজ্য সুবিধার কারণে আমাদের দেশ থেকেও বিভিন্ন জিনিস রপ্তানি করা হয়।

উদ্বোধনের সময় লিউয়েন ইউ বলেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এটি প্রথম চাইনিজ কর্নার। এই কর্নার উদ্বোধনের ফলে কালচারাল এক্সচেঞ্জের একটা সুযোগ তৈরি হল। গবেষণা ও শিক্ষায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় দেশের মধ্যে অগ্রগামী একটি প্রতিষ্ঠান। চাইনিজ কর্নারের জন্য এটি উপযুক্ত স্থান বলে মনে করি। ভবিষ্যতে এখানে সবধরনের সহযোগিতা আমরা করবো। চীনের সংস্কৃতি নিয়ে যাদের আগ্রহ আছে তাদের জন্য এই কর্নার সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশের উন্নয়নে চীন সহযোগিতা করে যাচ্ছে, সামনেও সেই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। ভালোভাবে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করায় বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন তিনি।

মিনি অডিটোরিয়ামে পলিটিক্যাল স্টাডিজে বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. জায়েদা শারমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক দিলারা রহমান। পিএসএস বিভাগের সহকারী মোহাম্মদ ফাখরুছ ছালামের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন চাইনিজ কর্ণারের তত্ত্বাবধায়ক ও পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাবুল হক এবং অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম।

চাইনিজ কর্নারের সমন্বয়কারি অধ্যাপক ড. সাহাবুল হক বলেন, এই কর্ণারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাথীরা চায়নার শিক্ষাব্যবস্থা, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় নিজেকে কিভাবে গড়ে তুলতে হবে তা শিখতে পারবে। পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অনার্স এবং মাস্টার্স লেভেল-এ বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কে ও চীন এর আন্তর্জাতিক প্রভাব সম্পর্কিত বিভিন্ন কোর্স পড়ানো হয়। চাইনিজ কর্ণারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ক্ষেত্রে উপকৃত, আন্তঃসম্পর্কের উন্নয়ন, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবে।

এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। কর্ণারের উদ্যোগে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।

অনষ্ঠান শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ভবন ‘এ’ এর ৪০৮ নম্বর কক্ষে কেক কেটে চাইনিজ কর্নার উদ্বোধন করা হয়।

পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ এবং অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।