আবারও ভাইরাল বাঁশখালীর চেয়ারম্যান প্রার্থী
বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছে, তাদেরকে স্মরন করলেন নৌকার প্রার্থী

বাংলাদেশ মেইল ::

দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার  ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের অসংলগ্ন বক্তব্যের কারনে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। নির্বাচনী মাঠে চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী মুজিবুর রহমানের দুটি বক্তব্য ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তুলে। ‘ ইভিএম না হলে তিনি ভোট মেরে দিতেন ‘- এমন বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। জাতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিতও হয়েছে। কিন্তু দলের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করার কারনে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।

এখন একই উপজেলার আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থীর দেয়া বক্তব্য নিয়ে দলের ভেতরে বাইরে শুরু হয়েছে তোলপাড়। বিতর্কের জন্ম দেয়া ভিডিওটি চট্টগ্রামের বাঁশখালীর ৪নং বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী  ও উপজেলা  যুবলীগের আহবায়ক  অধ্যাপক তাজুল ইসলামের। নির্বাচনী সভায় তিনি ভুল করে বলে ফেলেন,

‘ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট  বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে  হত্যা করেছে -আমি তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরন করছি। ‘

যদিও তিনি বলছেন, এটি তার বক্তব্যের কাটপিস। প্রকৃতপক্ষে তিনি জাতির বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের স্মরন করেছেন। খুনিদের নয়।

জানা গেছে (২ রা জুন) বাহারছরা ইউনিয়নের কলসীদিঘী এলাকায় তাজুল ইসলামের দেয়া বক্তব্যের খন্ডিত অংশ এটি।

হাতে আসা ভিডিওতে তাকে বলতে শুনা যায়,  ‘ যারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে কিছু কুচক্রী বিপদগামী সৈনিকের মাধ্যমে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ তার স্বপরিবারকে হত্যা করেছিলেন আমি তাদেরকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরন করছি। ‘

ধারনা করা হচ্ছে,  বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাজুল ইসলামের ‘ বঙ্গবন্ধুর খুনিদের নিয়ে’ অসংলগ্ন বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ভাইরাল করা হয়েছে। এর আগে ‘ আমার কাছে  সরকারী, লাইসেন্সধারী গুন্ডা আছে ‘ এমন বক্তব্য দিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন অন্য একটি ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী।পুঁইছড়ি ইউনিয়নের প্রেম বাজার এলাকায় এক নির্বাচনী পথসভায় নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য জাকের হোসেন বাচ্চু এসব বক্তব্য দিয়ে তুমোল সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাজুল ইসলাম সম্পর্কে দলের নেতাকর্মিদের নেতিবাচক ধারনা রয়েছে। তবে ভিডিও’র এ বক্তব্যে হয়তো ভুলে এমন কথা বলে ফেলেছেন তিনি।

আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ একটি সুত্র জানিয়েছেন,  তাজুল ইসলাম স্থানীয় সাংসদের অতি কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত। যুবলীগের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি স্থানীয় সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করছেন। নানা অনিয়মের সাথে জড়িত থাকার বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, দলের মনোনীত প্রার্থীদের সতর্কতার সঙ্গে বক্তব্য দিতে হবে৷ কিন্তু কেন্দ্রের নির্দেশনা কেউ মানতে নারাজ। বাঁশখালীর নির্বাচনে সতন্ত্র প্রার্থীর মোড়কে বিএনপি জামাতের প্রার্থী রয়েছে। নির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের এমন অসংলগ্ন বক্তব্যের ফায়দা নেয়াটা খুবই স্বাভাবিক।

এদিকে, শুক্রবার (৩ রা জুন) রাতে চেয়ারম্যান প্রার্থী  তাজুল ইসলাম তার বক্তব্যের খন্ডিত অংশ এডিট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে দাবি করে দোষীদের বিচার দাবি করেছেন। তিনি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেইজে এঘটনায় দোষীদের বিচার চেয়ে পোস্ট দেন।