বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে কটুক্তির অভিযোগও
সেই লিয়াকত আলী নৌকা প্রতীককে ব্যঙ্গ করে বললেন ‘ টাঙগো নাউ’

বাংলাদেশ মেইল ::

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের সমালোচিত ও বিতর্কিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী   বিএনপি’র বহিস্কৃত নেতা লেয়াকত আলী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকাকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিয়েছেন।

তার এমন ব্যঙ্গ করে বক্তব্য দেয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে ভাইরাল হয়েছে। এঘটনায় বাঁশখালীর সবখানে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।

রবিবার বিকেলে গন্ডামারা ইউপির ৭ নং ওয়ার্ডের হামিদ আলীর টেক এলাকায় লিয়াকত আলী তার নির্বাচনী পথ সভায় নৌকা প্রতীক ও আওয়ামীলীগ প্রার্থীকে হেয় করে বক্তব্য প্রদান করেন।

মঙ্গলবার (৭জুন) এ বিষয়ে জানতে উপজেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক শ্যামল দাশের সাথে যোগাযোগ করা তিনি বলেন, নৌকা ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ও স্বাধীনতার পরবর্তী আওয়ামীলীগের দলীয় প্রতীক। নৌকা প্রতীক নিয়ে গন্ডামারার সমালোচিত ব্যাক্তি লেয়াকতের কটুক্তি মেনে নেয়া যায় না। আমরা এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। পাশাপাশি এ ধরণের কর্মকান্ডের জন্য লেয়াকত আলীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি ।

বক্তব্য প্রদানকালে লিয়াকত আলী  নৌকা প্রতীককে কটাক্ষ করে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন,” ছোট ভাই বড় ভাই রে গাইল দিত পারে, এন উজ্ঞা মারহা আইননে আর ভাইয়্যে আর ছোট ভাইয়্যে এ টাংগো নাও এক্কান লইয়ে। টাংগো নাঔ হইদ্দি এ হারনে ইয়ান আগে আছিলদে ইউছুপ আলী সিকদারর ঘাডত। এত্তুন টলকেতে টলকেতে আইস্যেদে এমদাদ মিয়ার ঘাডত। এত্তুন টলকি টলকি আইস্যেদে আব্দু সালাম আজির ঘাডত। টলকেদে টাংগো নাঔ, টাংগো নাত উডিলে না ও উল্ডি যাগই মানুষউ ডুফি যাগই, ভুইজ্জনা? নাঔ ইয়ান আর ভাইয়ে বাইতও নারের টানিতও নারের টেলিতও নারের আলগাইতও নারের। মাঝে মাঝে সল লাগাবইল্লাই পুকুরিয়াত্তুন মুকুরিয়াত্তুন মানুষ আনে। আরার এডে দুইশো কিলোমিটারর মাথাত ভাই নিম্নচাপ উডে, এডে বারগো সরে না ডুবাইত নাঔ ঠিকাইত নপারিবো, সর বাড়িবো মাস্তুল ভাংগিবো নাঔ ও উল্ডি যাইবগই। সুতরাং আরার ভিবিন্ন টেকসি মেকসি যেগিন হামলা টামলা গইত্তে লাইগ্যো ছোট ভাই ইন ভালানো, তুঈ এহন যেগিন শুরু গইরগো আঈ তিরিশ বছর আগে এগিন শেষ গইরগি। ইন ভালানয় মানুষর মন জয়গরো। আর তালিরও অনুরোধ গইর গমদে এগুজা লিয়াকত আলীর বন্নাই নগইরগো, তুয়ারার দুশ্যন অইলদী আমামী লীগ, ১নম্বর দুশ্যন অইলাদে আরার তুঈ। একরে লেগ গরিবা দুয়ল্লাই হম হইবাদেনা, এগুজা আরেলইকা লট্টাখেলাহো, সুতরাং বাজিঅল আর হতাত যদি হনো ভুলত্রুটি তাহে অনরা মাফ গরিদিবান । ঝর নো আইসতে এক্কানা যারগায় । (ছোট ভাই বড় ভাইকে গালি দিতে পারে, এমন একটা মার্কা আনছে আমার ভাইয়ে আমার ছোট ভাইয়ে বাতাসের সাথে মছকে যাওয়ার মতো নৌকা একটা আনছে, বাতাসের সাথে মছকে যাওয়ার মতো নৌকা বলতেছি এ কারণে, এটা আগে ছিল ইউছুপ আলী সিকদারের ঘাটে, ওখান থেকে বাতাসে ধাক্কাতেই ধাক্কাতে নিয়ে আসছে এমদাদ মিয়ার ঘাটে, ওখান থেকে ধাক্কা খেতে খেতে আসছে আব্দু সালাম হাজ্বীর ঘাটে, বাতাসে ধাক্কা খায় যে নৌকা, এ নৌকাতে উঠলে নৌকাও উল্টে যায় মানুষও ডুবে মরে, বুঝছেন? নৌকা এটা আমার ভাইয়ে চালাইতে ও পারেনা, টানতে ও পারেনা, টেলতে ও পারেনা উপরে তুলতে ও পারেনা।মাঝে মাঝে নৌকা চালানোর জন্য পুকুরিয়া থেকে মানুষ আনে, আমাদের এখানে দুইশ কিলোমিটারের মাথায় ভাই নিম্নচাপ উঠে, এখানে ভাই আপনি নৌকা ঠিকাইতে পারবেন না, মানুষ মরবে, মাস্তুল ভাঙবে নৌকাও ডুবে যাবে, সুতরাং আমাদের বিভিন্ন সিএনজি তে হালমা টামলা যা করতেছো ছোট ভাই এগুলা ভালো না। তুমি এখন যেগুলা শুরু করছো তা আমি ত্রিশ বছর আগে শেষ করে আসছি, এগুলা ভালো না, মানুষের মন জয় করো। আর আমার তালই কেও অনুরোধ করবো সব সময় লিয়াকত আলীর বদনামি না করার জন্য, তোমার দুশমন হলো আওয়ামী লীগ, এক নম্বর দুশমন হলেন আমাদের তুমি, এককে ছোট করবেন দুইকে আরও কম বলবেন আমাদের জন্য, সব সময় আমার পিছনে পরে থাকেন কেনো? সুতরাং মুরুব্বিরা আমার কথায় যদি কোন ভুলত্রুটি হয়ে থাকে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। বৃষ্টি না আসতে একটু সবাই চলে যেতে পারি মতো আমি শেষ করে দিতে চাই, এখান থেকে সোজা পশ্চিম বড়ঘোনা ৫নং ওয়ার্ড মোজাহেরুল হক চৌধুরীর বাড়িতে যাব)।

লেয়াকতের এ বক্তব্য নিয়ে আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এর আগেও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী লেয়াকত আলী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটুক্তি মূলক বক্তব্য ও ¯েøাগান দিয়ে সমালোচিত হয়েছিলেন। যে নৌকা প্রতীক ১৯৭০ সালে জাতীয় নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে পরবর্তীতে ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতীক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতীক নৌকা প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর কটাক্ষমূলক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাঁশখালীসহ চট্টগ্রাম ব্যাপী আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের নির্মিতব্য কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন ও বিব্রতকর বানোয়াট উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে উক্ত চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে সাধারন জনগনকে উত্ত্যক্ত করে পাঁচজন নিরীহ মানুষকে হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনায় মামলাও দায়ের হয়েছিল । বর্তমানে তিনি এলাকায় কিশোর গ্যাং, লাঠিয়াল ও সন্ত্রাসী অস্ত্রধারী বাহিনী সৃষ্টি করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন বলে সাধারন মানুষের অভিযোগ । তার এ সমস্ত অপকর্মের লাগাম টেনে ধরা প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বাঁশখালী সর্বস্থরের জনতা।

এ ব্যাপারে জানতে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ ফয়সাল আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।