তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের জমি বিক্রি পানির দামে

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক আইইবি’র  ( ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ) মালিকানাধীন কক্সবাজারের ঝিলিংঝায় দশ শতক জমি  বিক্রি করে টাকা আত্মসাত করেছেন। আইইবি’র ( ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ) তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে রফিকুল ইসলাম মানিকের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করা হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চট্টগ্রাম  কেন্দ্রের ভাইস-চেয়ারম্যানের পদে থাকা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিকের বিরুদ্ধে তার কর্মস্থল সিটি করপোরেশনেও অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

আইইবি’র সুত্রমতে, উপকেন্দ্র নির্মানের জন্য ১৯৯৮ সালে কক্সবাজারের ঝিলিংঝা মৌজায় দশ শতক জায়গা ক্রয় পেশাজীবি সংগঠন ‘ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ’। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল  ও নির্বাহী  কমিটিকে না জানিয়ে  একক সিদ্ধান্ত সেই জায়গা স্বল্প মূল্যে বিক্রি করে দেন আইইবি’র সম্মানি সম্পাদকের  (২০১৮-১৯) পদে থাকা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক।

সংগঠনের সংবিধানের  ১০৪ ধারা উপেক্ষা করে জমি বিক্রির মাধ্যমে  টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ তদন্তে ২০২১ সালের ৯ই নভেম্বর  সংগঠনের সাধারন সভায় সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী কবির আহমেদ  ভুঁইয়াকে আহবায়ক করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে আইইবি।

তদন্ত কমিটি কক্সবাজার উপ কেন্দ্রের জন্য ১৯৯৮ সালে ক্রয়কৃত দশ শতক জমি বিক্রি করে দেবার কারণ জানতে চেয়ে ২০২১ সালের ২৮ শে নভেম্বর আইইবি’র সম্মানী সম্পাদক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম,   কক্সবাজার শাখার সভাপতি প্রকৌশলী বদিউল আলম ও সাধারন সম্পাদক প্রকৌশলী জহির উদ্দিন আহমেদকে তিনদিনের মধ্যে  কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়৷

জানা যায়, ২০১৯ সালের ২২ শে সেপ্টেম্বর আইইবি’র সম্মানী সম্পাদক প্রকৌশলী  রফিকুল ইসলাম মানিক সংগঠনটির কক্সবাজারের সভাপতি, সাধারন সম্পাদককে চিঠির মাধ্যমে জমিটি বিক্রির জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবে কক্সবাজার আইইবি’র সাবেক সাধারন সম্পাদক প্রকৌশলী জহির উদ্দিন আহমেদ জমিটির বিক্রয় মুল্য ২৭ লক্ষ টাকা উল্লেখ করলেও; জমি রেজিষ্ট্রেশনের দলিল ও মৌজা রেইট অনুযায়ী ৬৭ লক্ষ দশ হাজার টাকায় তারা সংগঠনের জমিটি বিক্রি করেছিলেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, কক্সবাজারের সেই জমি বিক্রি করে নতুন জমি ক্রয়ের জন্য ২০১৯ সালের ১১ই জুলাই আইইবি চট্টগ্রামের তৎকালীন  কমিটির সভায় পরিকল্পিতভাবে আট সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটিকে বিভ্রান্ত করে আইইবি’র সাবেক সম্মানী সম্পাদক  প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক সংগঠনের দশ শতক জমি বেশি দামে বিক্রি করে টাকা আত্মসাত করেছেন। এছাড়া ২০১৮-১৯ মেয়াদের কমিটির স্থানীয় কাউন্সিল  সভায় কারসাজি করার বিষয়টিও প্রমাণিত হয়েছে।

তদন্ত কমিটির আহবায়ক সভাপতি প্রকৌশলী কবির আহমেদ  ভুঁইয়া বলেন,  ‘ কারসাজি করে আইইবি’র কক্সবাজারের জমি বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিকের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করা হয়েছে। ‘

এদিকে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত রফিকুল ইসলাম মানিকের বিরুদ্ধে নিজের কর্মস্থলে ছেলের লাইসেন্সে  ‘ঠিকাদারি ‘ করার অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।

প্রসঙ্গত, ১৯৪৮ সালের  তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্সের অনুমোদন দেয়।  স্বাধীনতার পরও সংগঠনটির নাম অপরিবর্তিত থেকে দেশের প্রকৌশলীদের নিয়ে কাজ করছে ‘আইইবি’।