চীনে ব্যবসায়ী গুম হচ্ছে একের পর এক

বাংলাদেশ মেইল ::

চীনের সুপরিচিত চায়না রেনেসাঁ হোল্ডিংসের প্রধান নির্বাহী বাও ফ্যানের সাথে গত কয়েকদিন ধরে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না বলে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছে তার কোম্পানি। চীনের প্রযুক্তি-খাতের বিনিয়োগে বাও একজন শীর্ষস্থানীয় ব্রোকার যার ক্লায়েন্টদের মধ্যে রয়েছে শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি কোম্পানি ডিডি এবং মেইটুয়ান।

চায়না রেনেসাঁ হোল্ডিংসের এই বিবৃতির পর অর্থ ও প্রযুক্তি-খাতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বেইজিং সরকার কতৃক সম্ভাব্য গুম করার উদ্বেগকে নতুন করে বাড়িয়ে দিয়েছে। একই সঙ্গে শুক্রবার সংস্থাটির শেয়ারের দর পড়ে যায়।

বাও কতদিন ধরে নিখোঁজ সে ব্যাপারে কোম্পানিটি নির্দিষ্ট করে কিছু বলেনি। তবে চীনা বার্তা সংস্থা কাইক্সিন সূত্রের বরাত দিয়ে খবর দিয়েছে, কর্মচারীরা গত দুইদিন ধরে তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি।

একই বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আইসিবিসি ব্যাংকে তার আগের কাজের জন্য ঐ কোম্পানির চেয়ারম্যান কং লিনকে কর্তৃপক্ষ গত সেপ্টেম্বর মাসে তুলে নিয়ে গেছে।

যদিও চায়না রেনেসাঁ হোল্ডিংস কং-এর অবস্থা সম্পর্কেও এখনও কোন মন্তব্য করেনি। কোম্পানির ওয়েবসাইটে কিংবা কোম্পানির মুনাফা প্রতিবেদনেও একজন নির্বাহী হিসাবে তার নামটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

এদিকে বাও-এর এই গুম হওয়ার ঘটনা চীনা ব্যবসায়িক নির্বাহীদের কোনো ধরনের ব্যাখ্যা ছাড়াই কিছু সময়ের জন্য হঠাৎ নিখোঁজ হওয়ার ইতিহাসকে মনে করিয়ে দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা-বাণিজ্য বিষয়ক পত্রিকা ফোর্বস ম্যাগাজিনের খবর অনুযায়ী, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সাথে বিরোধের জেরে গত কয়েক বছরে অন্তত ছয় জন বিলিওনেয়ার কিছু সময়ের জন্য নিখোঁজ হয়েছেন। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে তাদের দুর্নীতি, কর ফাঁকি কিংবা অন্যান্য অসদাচরণ সংক্রান্ত তদন্তের ফাঁদে ফেলা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়।

সাময়িকভাবে গুম হয়ে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে ফোসান গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গুও গুয়াংচ্যাং, যাকে চীনের ওয়ারেন বাফেট বলে ডাকা হয়। ২০১৫ সালে তিনি কিছু দিনের জন্য নিখোঁজ ছিলেন।

চীনা-ক্যানাডিয়ান ব্যবসায়ী জিয়াও জিয়ানহুয়াকেও ২০১৭ সালে তুলে নেয়া হয়েছিল। তিনি চীনের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ছিলেন এবং দুর্নীতির দায়ে গত বছর তাকে জেলে পাঠানো হয়।

এছাড়াও চীনের শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার সমালোচনা করার পর ২০২০ সালের শেষের দিকে আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মাও তিন মাস নিখোঁজ ছিলেন। তিনি তার ডিজিটাল পেমেন্ট কোম্পানি অ্যান্ট ফিন্যান্সিয়ালের শেয়ার বাজারের ছাড়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন, যেটি ঘটলে তিনিই হতেন চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি।