মৌলবীবাজার -৩ ( রাজনগর)
রহিম ছাড়া প্রার্থী নাই, রাজাকারের ভোট নাই

বাংলাদেশ মেইল  ::

মৌলবীবাজার সদর আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী জিল্লুর রহমানের বিপক্ষে দলের তৃণমূল। মৌলভীবাজার সদর, জেলা আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে  দল মনোনীত প্রার্থী জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের দাবি জিল্লুর রহমানকে কখনো দলের মিছিল সমাবেশে দেখা যায়নি। দলের দুর্দিন সংকটেও জিল্লুর রহমানের দেখা মেলেনি। তাদের দাবি জিল্লুর রহমান নৌকা প্রতীক পেয়েছেন দলের হাই কমান্ডকে ভুল বুঝিয়ে।

স্থানীয় মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য ও ক্লিন ইমেজের ভালো প্রার্থী হিসেবে প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজার সদর আসনে প্রথম বৃটিশ বাংলাদেশি কাউন্সিলর এম এ রহিমকে বিজয়ী করার আহবান জানিয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর)  এক সুধি সমাবেশে আসনের সাবেক সাংসদ নেছার আহমেদসহ, জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা প্রকাশ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ রহিমকে সমর্থন জানিয়েছেন।

মৌলবীবাজার সদর (রাজনগর) আসনের সংসদ সদস্য  নেছার আহমদ এমপি বলেছেন, ‘ আওয়ামী লীগের সংকট ও দুর্দিনের নেতা এম এ রহিম।  এম এ রহিম  সিআইপি এমপি হলে মৌলভীবাজার ও রাজনগর আওয়ামী পরিবার বাঁচবে। রহিম শহিদ এমপি না হলে আওয়ামী আদর্শের কেউ রাজনীতি করতে পারবে না।  এতোদিনের কস্ট, এতোদিনের ত্যাগ – সব বৃথা যাবে।   ‘

সুধী সমাবেশে মৌলবীবাজার  জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ও  পৌরসভার চেয়ারম্যান  ফজলুর রহমান বলেছেন, ‘ আজকে যিনি নৌকা নিয়ে এসেছেন তাকে আমরা কখনো মিছিল সমাবেশে দেখি নাই। শীতের পাখি জিল্লুর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। তাকে কখনো দলের মিছিল সমাবেশে দেখা যায়নি।  এমনকি এক এগারো কিংবা লগি বৈঠার ঝুঁকিপূর্ণ সময়েও  দলের সাথে ছিলেন না । ‘

সমাবেশে বক্তারা বলেন, জনমত যাচাই না করে প্রার্থী বাছাইয়ের পরীক্ষায় ভুল করেছে  হাইকমান্ড ।  দেশে-বিদেশে বিদ্যমান ব্যবস্থায় ভালো নির্বাচন সম্ভব, সেটি প্রমাণিত করতে স্বচ্ছ ইমেজ সম্পন্ন স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ রহিমকে বিজয়ী করতে একাট্টা দলের বাঘা বাঘা নেতারা। সামনে নির্বাচন, এমনি পরিস্থিতিতে, এই স্বাধীনতা বিরোধীরা দলের ভিতরে থেকে আত্মঘাতিমুলক কাজ করে সরকারের ক্ষতি করবে। মৌলভীবাজারের স্থানীয় রাজনীতির জন্য বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংগঠন ও দেশের স্বার্থে, নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে আশু ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছে মৌলবীবাজার জেলা  আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

জিল্লুর বাদে প্রার্থী চাই’ রহিম ভাইয়ের বিকল্প নাই, ‘ রাজনগরের মানুষ বেঁধেছে জোট, রাজাকারের সন্তান বিদায় হোক’ ডিসেম্বরের শপথ হোক,রাজকারের বিদায় হোক’ সহ নানা শ্লোগান দিতে দেখা যায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ রহিম সিআইপি বিজয়ী হবেন বলে মনে করছে আওয়ামী লীগের তৃণমূল। এক এগারোর সংকটকালে লন্ডনে দলের সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মুক্তির আন্দোলনে জীবনবাজি রেখেছেন তিনি। সেনা সমর্থিত সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দলের সভানেত্রীর দেশে ফেরার পক্ষে জনমত তৈরি করেছিলেন এম এ রহিম।

স্থানীয়ভাবে প্রচারিত হচ্ছে যে, মৌলবীবাজার সদর রাজনগর আসনে আওয়ামী লীগ কেন/কোনস্বার্থে স্থানীয় রাজাকার পরিবার, বিএনপি ও স্বাধীনতা বিরোধী বলয় থেকে মনোনয়ন দিয়েছে। যার পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত, বাবাও কুখ্যাত রাজাকার তাকে নৌকার মাঝি হিসেবে বেছে নিয়ে আওয়ামী লীগ বিরোধী ষড়যন্ত্র করার সুযোগ করে দিয়েছে একটি সিন্ডিকেট । এমন ষড়যন্ত্রের নেপথ্য কারণ লুটপাট করে আওয়ামী লীগের ইমেজ নষ্ট  অথবা আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রতিক্রিয়াশীল  সমর্থক সৃষ্টি করা।

প্রসঙ্গত, মৌলভীবাজার-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রাপ্ত জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়  মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী ছিলেন তার বাবা মোঃআব্দুল মছব্বির। কথিত আছে যে জিল্লুর রহমান তার কালো টাকার বিনিময়ে সেই মামলা থেকে তার পিতার নাম অপসারণ করেছেন।  জিল্লুর পিতা যে একজন চিহিৃত্ন রাজাকার ছিলেন তা উল্লেখ আছে রাজনগরের কৃতি সন্তান ইতিহাসবিদ জনাব ড.মুমিনল হক রচিত রাজনগরের ইতিবৃত্ত বইয়ে। স্থানীয়দের ভাষ্য  জিল্লুর রহমানের পিতা আব্দুল মছব্বির স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে শান্তি কমিটির মেম্বার ছিলেন। সেই প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তিনি অনেক গরীব অসহায় মানুষের ভূমি আত্বসাৎ করেন। পরবর্তীতে ৭ নং কামারঁচাক ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার নির্বাচিত হন।  তৎতকালীন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান  মোঃদুরুদ মিয়া লন্ডন সফরে গেলে মছব্বিরকে ( জিল্লুর পিতা) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের চার্জ দিয়ে যান। কিন্তু  কয়েক মাস পর দরুদ মিয়া চেয়ারম্যান দেশে ফিরে এসে চার্জ গ্রহন করতে চাইলে চার্জ ফেরত না দিয়ে, উল্টো তাকে লাথি মেরে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের করে দেন।