কিস্তির টাকা আদায় করতে গিয়ে এনজিও কর্মী ও নারী গ্রাহকের মধ্যে মারামারি,আহত ৫

আল আমিন,নাটোর প্রতিনিধি:-

নাটোরের গুরুদাসপুরে কিস্তির টাকা আদায় করতে গিয়ে এনজিও কর্মী ও নারী গ্রাহকের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এক নারী গ্রাহকের মাথা ফাঁটানোর অভিযোগ উঠেছে আশা এনজিওর ৫ কর্মীর বিরুদ্ধে। এ সময় আরও দুই যুবকও আহত হয়েছেন।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের পমপাথুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন, পমপাথুরিয়া গ্রামের মো. সোহেলের স্ত্রী কুলসুম বেগম (২৮), সোহেল হোসেন (৩২) ও তার ছোট ভাই মো. শান্ত হোসেন (২২)। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

আহত কুলসুম বেগম জানান, ‘অভাব অনটনের সংসার আমাদের। এ কারণে আশা এনজিওর মৌখাড়া শাখা থেকে আমার স্বামী সোহেলের নামে ৮৬ হাজার ও শাশুড়ি আরজিনা বেগমের নামে ৪৫ হাজার টাকা সাপ্তাহিক কিস্তি হিসেবে ঋণ নিয়েছিলাম। প্রায় দশ বছর যাবৎ এই সমিতি থেকে আমরা ঋণ নিয়ে আবার পরিশোধও করেছি। কিন্তু চলমান কিস্তির দুই সপ্তাহের টাকা বকেয়া পরে ৭ হাজার টাকা। ছেলের অসুস্থতা ও আর্থিক সমস্যার কারণে এই দুই সপ্তাহ কিস্তি দিতে পারিনি। শনিবার সন্ধ্যায় আশা এনজিওর সিনিয়র সহকারী ম্যানেজার মাসুদ রানা, সিনিয়র লোন অফিসার মোশারফ হোসেন, লোন অফিসার সাইদুল ইসলাম, মিলন নন্দী ও চাম্পা খাতুন আমাদের বাড়িতে কিস্তির টাকা আদায় করার জন্য আসেন। টাকা দিতে সমস্যা হচ্ছে বলে এনজিও কর্মীদের আমি অনুরোধ করে আর কিছুদিন অপেক্ষা করতে বলার পরপরই বিভিন্ন ধরনের গাল মন্দ করতে থাকেন।

একপর্যায়ে এনজিওকর্মীদের আমি বলেই ফেলি যে আমাদের মারপিট করলেও এখন টাকা দেওয়া সম্ভব হবে না। এ কথা বলার পরেই বাড়ির উঠানে থাকা আমার সেলাই মেশিনের টেবিল থেকে কাচি নিয়ে প্রথমে আমার ওপর হামলা চালায়। পরবর্তীতে আমার স্বামী ও দেবর এগিয়ে এলে তাদেরকেও গালমন্দ করে মারধর করতে থাকেন। পরে স্থানীয়রা এসে আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

আশা এনজিওর মৌখাড়া শাখার সিনিয়র সহকারী ম্যানেজার মাসুদ রানা বলেন, ‘এনজিওর কার্যক্রম অনুযায়ী গ্রাহকের বাড়িতে আমরা টাকা আদায় করতে গিয়েছিলাম। পরবর্তীতে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা আমাদের আক্রমণ করে। নিজেদের বাঁচানোর জন্য দুই পক্ষের মধ্যেই ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে ওই নারীর হাতে থাকা কাচি লেগে তার মাথা কেটে যায়। আমরা কাউকে উদ্দেশ্য করে আঘাত করিনি। এছাড়াও আমরা নিজেরাও আহত হয়েছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রাজিব হোসেন জানান, ‘কুলসুম বেগমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাছাড়াও তার মাথায় দুটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। বাকি দুজন রোগীকেও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন জানান,উভয়পক্ষ অভিযোগ দিয়েছেন তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।