বিএম ডেস্ক: বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ষষ্ঠ আসর থেকে বিদায় নিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্স। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটস দলটিকে হারিয়েছে ৫ উইকেটের ব্যবধানে।
১৪৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা ঢাকা এদিন জয় পেয়েছে ২০ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে রংপুর রাইডার্স সংগ্রহ করে ১৪২ রান।
জবাবে খেলতে নেমে শুরুতেই দুই ওপেনার উপুল থারাঙ্গা ও সুনীল নারাইনকে হারায় ঢাকা ডায়নামাইটস। মাশরাফি বিন মুর্তজার শিকার হয়ে থারাঙ্গা (৪ রান) ও নাজমুল ইসলাম অপুর শিকার হয়ে নারাইন (১৪ রান) ফেরেন সাজঘরে।
তবে চাপ সামাল দেন রনি তালুকদার ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ২০ বলে ২৩ রান করে সাকিব সাজঘরে ফিরলে কাইরন পোলার্ডও আউট হয়ে যান। এরপর রনিও সাজঘরে ফিরলে ক্ষণিকের জন্য জয়ের সম্ভাবনা জাগায় রংপুর রাইডার্স। ২৪ বলে ৩৫ রান করেন তিনি।
তবে রংপুরের জয়ের স্বপ্ন ধুলোর সাথে মিশিয়ে দেন আন্দ্রে রাসেল। নুরুল হাসান সোহানের ধীর-স্থির ব্যাটিংয়ের সুবিধা কাজে লাগিয়ে এক প্রান্তে তিনি খেলছিলেন চড়াও হয়ে।
শেষ পর্যন্ত তিনিই নিশ্চিত করেন জয়, একইসাথে ছিলেন দলের সর্বোচ্চ স্কোরারও। মাত্র ১৯ বলের মোকাবেলায় পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়ে ৪০ রান করে অপরাজিত ছিলেন রাসেল। সোহানের ব্যাট থেকে আসে ৯ রান, ১৭ বলের মোকাবেলায়। ঢাকা জয় পায় ৫ উইকেট ও ২০ বল হাতে রেখেই।
রংপুরের পক্ষে মাশরাফি শিকার করেন দুটি উইকেট।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে রংপুর রাইডার্সকে দারুণ সূচনা এনে দেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিল দুই ওপেনার ক্রিস গেইল ও নাদিফ চৌধুরীর ব্যাট। একাদশে জায়গা পেয়ে ঝড়ো ব্যাটিংয়ের আভাস দিচ্ছিলেন নাদিফ। দুটি চার ও টানা তিনটি ছক্কা হাঁকিয়ে ঝড়ের পূর্বাভাস দিচ্ছিলেন বেশ ভালোভাবেই। তবে শুভাগত হোমের বলে স্নায়ু নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আবারও উড়িয়ে মারতে গিয়েই কাইরন পোলার্ডের হাতে তালুবন্দি হন তিনি। তার আগে ১২ বলের মোকাবেলায় করেন ২৭ রান।
নাদিফের বিদায়ের পর খেই হারান গেইলও। পরের বলে রুবেল হোসেনের ডেলিভারি তার ব্যাট ছুঁয়ে আশ্রয় নেয় উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে। ১৩ বলে ১৫ রান করা গেইলের ব্যাট তাই দলের প্রয়োজনেও চওড়া হতে পারেনি।
দুই ওপেনারকে হারানোর পর দল যখন চাপে তখন খেই হারান রাইলি রুশোও। দলের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান রুবেলের পরের বলেই সাজঘরে ফেরেন, তাকেও তালুবন্দি করেন পোলার্ড। সেই চাপ অবশ্য দূরীভূত হয় রবি বোপারা ও মোহাম্মদ মিঠুনের ব্যাটিংয়ে।
মিঠুন ও বোপারা দেখে-শুনে খেলতে থাকলে আবারও রংপুর রাইডার্স পায় বড় সংগ্রহের আশা। দলীয় ৪২ রানে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় উইকেট হারানো দলটি চতুর্থ উইকেট হারায় শতরান পেরোবার পর। দলীয় ১০৬ রানে সাজঘরে ফেরেন দুটি চার ও দুটি ছক্কায় ২৭ বলে ৩৮ রান করা মিঠুন, কাজী অনিকের শিকার হয়ে।
মিঠুনের বিদায়ের পরও ক্রিজে টিকে ছিলেন বোপারা, তবে তার ব্যাট থেকে রান আসছিল না ম্যাচের মেজাজ অনুযায়ী। ঢাকা ডায়নামাইটসের বোলারদের বিপক্ষে খুব একটা সুবিধা করতে না পেরে ৮ বলে মাত্র ৩ রান করে আউট হয়ে যান বেনি হাওয়েলও। সুবিধা করতে পারেননি অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও। নামের পাশে কোনো রান যোগ করার আগেই তিনি ফেরেন সাজঘরে।
শেষদিকে বোপারা চড়াও হলেও রংপুরের ইনিংস বেশিদুর এগোতে পারেনি। ২০তম ওভারের ২ বল বাকি থাকতেই মাশরাফির দল গুটিয়ে যায় ১৪২ রানে। বোপারা ৪৩ বলে ৪৯ রান করেন, যা দলের পক্ষে সর্বোচ্চ।
ঢাকার পক্ষে রুবেল হোসেন তিনটি এবং কাজী অনিক ও আন্দ্রে রাসেল দুটি করে উইকেট শিকার করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস: ঢাকা ডায়নামাইটস
রংপুর রাইডার্স ১৪২ (১৯.৪ ওভার)
বোপারা ৪৯, মিঠুন ৩৮, নাদিফ ২৭
রুবেল ২৩/৪, অনিক ২১/২
ঢাকা ডায়নামাইটস ১৪৭/৫ (১৬.৪ ওভার)
রাসেল ৪০*, রনি ৩৫, সাকিব ২৩
মাশরাফি ৩২/২, হাওয়েল ১৭/১
ফল: ঢাকা ডায়নামাইটস ৫ উইকেটে জয়ী।