পাঙ্গাস মাছের আচার ও পাউডার উদ্ভাবন

    বিএম ডেস্ক : দীর্ঘ দুই বছরের গবেষণায় সকল পুষ্টিগুণ ঠিক রেখে পাঙ্গাস মাছের আচার ও পাউডার তৈরি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মৎস্য প্রযুক্তিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম নওশাদ আলম ও তার গবেষক দল।

    মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান অধ্যাপক ড. এ কে এম নওশাদ আলম।

    অধ্যাপক নওশাদ বলেন, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় মিঠা পানির মাছের আহরণ ক্ষতি প্রশমন ও মূল্য সংযোজন প্রকল্পের আওতায় আমরা দুই বছর ধরে গবেষণা করছি। এ গবেষণার হাত ধরেই পাঙ্গাস মাছের সব পুষ্টিগুণ ঠিক রেখে স্বল্প খরচে লোভনীয় স্বাদ ও গন্ধের মচমচে পাঙ্গেসের আচার ও পাউডার উদ্ভাবন করেছি।

    পাঙ্গাসের পাউডার বিষয়ে তিনি বলেন, পাঙ্গাস মাছের চর্বি কক্ষ তাপমাত্রায় নষ্ট হয়ে যায়। এর চর্বি ও আমিষকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ উপযোগী করে পাউডার তৈরি করা হয়েছে। এক কেজি পাঙ্গাস থেকে প্রায় ২৫০ গ্রাম পাউডার তৈরি করা সম্ভব। এটিও এক বছরের মতো সংরক্ষণ করা যাবে। পাঙ্গাসের পাউডার দিয়ে আচার, ভর্তা, স্যুপ, নুডলস, তরকারি খিচুরি ইত্যাদি বানানো যাবে। এছাড়াও পাউডার দুধ বা নবজাতকের খাবার, বেকারি পণ্য, বিস্কুট, চিপস্ বা অন্যান্য যেকোন খাদ্য দ্রব্যে মিশিয়ে পুষ্টিগুণ বাড়ানো যাবে। মাত্র ১.৫০ টাকা মূল্যের ৩ গ্রাম পাউডার দিয়ে এক জনের খাওয়ার উপযোগী ২৫০ মিলি স্যুপ বা ৮০ গ্রাম ওজনের ১ বাটি নুডলস তৈরি করা সম্ভব। এর পাউডারে ৪৫ ভাগ আমিষ, ৩২ ভাগ চর্বি, ১ ভাগ মিনারেল ও ৯ ভাগ ফাইবার পাওয়া গেছে।

    পাঙ্গাসের আচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাধারণ রান্নার যন্ত্রপাতি ও তৈজসপত্র দিয়েই স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ বজায় রেখে এ মচমচে পাঙ্গাস আচার তৈরি করা যাবে। আচারটি শুকনো ও মচমচে হওয়ায় প্রায় এক বছরের অধিক সময় কক্ষ তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যাবে। আচারটিতে শতকরা ৩৭ শতাংশ আমিষ, ২৮ শতাংশ স্নেহ, ১৬ শতাংশ মিনারেল ও ১১ শতাংশ ফাইবার পাওয়া যাবে।

    ‘আচারে পাঙ্গাসের তেল অক্ষুণ্ণ থাকায় হৃদরোগের ঝুঁকিও কমবে। এক কেজি পাঙ্গাস মাছ থেকে ৩৫০ গ্রাম আচার পাওয়া যাবে। যা উৎপাদন করতে সর্বমোট ১২০-১৫০ টাকা খরচ পড়বে। যা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রয় করা সম্ভব হবে।’

    খুব শীঘ্রই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ পণ্য দুটি বাজারে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক নওশাদ।

    বিএম/রনী/রাজীব