রাবি শিক্ষক লিলন হত্যায় ৩ জনের ফাঁসির আদেশ

    বিএম ডেস্ক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম শফিউল ইসলাম লিলন হত্যা মামলায় তিনজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

    সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার এই আদেশ দেন।

    ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, আব্দুস সালাম পিন্টু, সবুজ শেখ ও আরিফুল ইসলাম মানিক। পিন্টু ও মানিক যুবদলের নেতা। এই দুজন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অপর দণ্ডপ্রাপ্ত সবুজ পলাতক।

    এছাড়া মামলার অন্য আট আসামি বেকসুর খালাস পেয়েছেন। তারা হলেন দণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুস সালাম পিন্টুর স্ত্রী নাসরিন আখতার রেশমা, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জল, সিরাজুল ইসলাম, আল-মামুন, সাগর হোসেন, জিন্নাত আলী এবং ইব্রাহিম খলিল ওরফে টোকাই বাবু।

    এর আগে গত ৪ এপ্রিল রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যুক্তিতর্ক শেষে মামলাটির রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন বিচারক অনুপ কুমার।

    চাঞ্চল্যকর এই মামলাটিতে মোট ৩৩ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এন্তাজুল হক বাবু।

    ড. শফিউল ইসলাম মুক্তমনা ও প্রগতিশীল আদর্শের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত ছিলেন। ২০১৪ সালের ১৫ নভেম্বর বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পরের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মুহাম্মদ এন্তাজুল হক অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মতিহার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

    ড. শফিউল খুনের ৫ ঘণ্টার মাথায় ফেসবুকে একটি পাতা খুলে দায় স্বীকার করে ‘আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২’ নামে একটি জঙ্গি সংগঠন। তাই উগ্রবাদী এই সংগঠনটি হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছিল। তবে তদন্তে বেরিয়ে আসে ব্যক্তিগত কোন্দলের জেরেই খুন হন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক। আর এই কোন্দল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাসরিন আখতার রেশমার সঙ্গে।

    হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ২৩ নভেম্বর প্রথমেই রেশমার স্বামী রাবি ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আবদুস সামাদ পিন্টুসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে রেশমাকেও গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

    পরবর্তীতে রাজশাহী মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) তৎকালীন পরিদর্শক রেজাউস সাদিক ১১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘদিন ধরে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ট্রাইব্যুনালে চাঞ্চল্যকর এই মামলাটির রায় ঘোষণা করা হয়।

    চার্জশিটে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব শাখায় কর্মরত নাসরিন আখতারের সঙ্গে শফিউল ইসলামের দ্বন্দ্বের জের ধরেই তার স্বামী যুবদল নেতা আব্দুস সালাম পিন্টু সাঙ্গ-পাঙ্গ নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। পরে নাসরিন আখতারও বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। চার্জশিটে অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন উজ্জল, আব্দুস সালাম পিন্টু, পিন্টুর স্ত্রী নাসরিন আক্তার রেশমা, যুবদল নেতা আরিফুল ইসলাম মানিক, সবুজ শেখ, সিরাজুল ইসলাম কালু, আল-মামুন, সাগর, জিন্নাত ও আরিফ।

    বিএম/রনী/রাজীব