হাইকোর্টের রায় লংঘন করে সভাপতি পদে প্রধান শিক্ষক!

    মিরসরাই প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন এক প্রধান শিক্ষক। সদস্য ও সভাপতি পদে নির্বাচনের ক্ষেত্রে মানা হয়নি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রবিধানমালা। অমান্য করা হয়েছে হাইকোর্টের দেয়া রায়ও।

    জানা গেছে, গত ১৮ এপ্রিল উপজেলা সদরের মিরসরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের অভিভাবক সদস্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২১ এপ্রিল নির্বাচিত অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধিদের অংশগ্রহনে সভাপতি নির্বাচিত হন বারইয়ারহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হক। প্রবিধানমালার (৭)২ এর বিধান ভঙ্গ করে তিনি ইতিপূর্বে বিগত কমিটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই শিক্ষককে আবারো ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করায় বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবক ও স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানিয়েছেন, প্রবিধানমালার ২০০৯-এর ৭(২)-এ স্পষ্টত বলা আছে, ‘কোনো শিক্ষক কিংবা শিক্ষক শ্রেণির সদস্য গভর্ণিং বডির সভাপতি পদে মনোনীত হইবেন না’। এরপর আবারো নিয়ম ভঙ্গ করে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে কেন একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হককে নির্বাচিত করা হলো তা বোধগম্য নয়। একই উপজেলার একটি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরেকটি বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন কোন ভাবেই সমিচিন নয়।

    অভিভাবকরা আরো জানান, শিক্ষকদের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে থাকার বৈধতা নিয়ে করা এক রিটের রায়ে ২০১৮ সালের ৯ মে হাইকোর্ট বেঞ্চ জানান, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ( স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা) কোনো শিক্ষক সভাপতি পদে নির্বাচিত বা মনোনীত হতে পারবেন না।

    মিরসরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিন জানান, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অভিভাবক সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের সভাপতি পদে এনামুল হক গতবারের মতো এবারও নির্বাচিত হয়েছেন এতে বিধি লংঘনের বিষয়টি তার জানা ছিলোনা।

    মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, ‘এটা কিভাবে সম্ভব। এটাতো নিয়মের মধ্যে পড়েনা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এধরনের অনিয়ম হওয়া উচিত নয়’।

    এবিষয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর শাহেদা ইসলাম জানান, যেহেতু হাইকোর্টের রিটের রায়ে সুস্পষ্টভাবে প্রবিধানমালার (৭)২ সম্পর্কে নির্দেশনা রয়েছে সেহেতু সভাপতি পদে শিক্ষক শ্রেণির কেউ সভাপতি পদে মনোনীত হওয়া ঠিক নয়। এ ধরনের বিষয় যদি ঘটে তবে তা হবে ত্রুটিপূর্ন। বিধি বহিঃভুত কোন কিছুই আমরা অনুমোদন দেবোনা।

    বিএম/আশরাফ/রাজীব…