সরকারি দর অনুযায়ী ধান বিক্রি করতে পারবে কী কৃষক?

    গৌতম:কালের বিবর্তনে আজ কৃষি ক্ষেত্রে ধানের বাম্পার ফলন হলেও এক মন ধান বিক্রি করেও সন্তানদেরকে এক কেজি খাসির মাংস কিনে খাওয়াতে পারছে না কৃষক পিতা। কৃষকের সন্তান হয়ে এ লজ্জা রাখি কোথায় ? পিতার মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। সারাদিন পরিশ্রম করে ফসলের ধান মাড়াই করে এখন ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারছে না।

    কৃষকদের সাথে নানা ভাবে বাটপারি করতেছে ব্যাপারীরা। এখন ধান বিক্রি করে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে হিমসিম খাচ্ছে পিতা কি করে চালাবে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ,যে ভাবে বাজারে ধানের মূল্যে আছে,তা শ্রমিক ও দোকানদারকে দিয়ে চলে যাবে?

    তাই আমি কৃষকের সন্তান হয়ে। পিতার চোখে মূখে স্পষ্ট দেখতে পাই হাহাকারের ছাপ। বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ হলেও দামের মূল্য কম ! কিন্তু এটা সরকারকি জানে না? দেশের মেরুদন্ড যে চাষী!

    মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সোনালী ফসল উৎপাদন করে বিক্রি করতে পারে না ন্যয্য মূল্যে ফসল। কি করে কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে । সরকার নির্ধারিত রেট করলেও তা পাই না ন্যায্যমূল্যে কৃষক। নানা ছলনা নানা অজুহাত কত ধরনের ফন্দী করে যারা। ধান কিনবে তারা ঠিকি কিন্তু ব্যাপারী, রাজনীতিবীদ ও ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের কাছ থেকে। নষ্ট পঁচার নিয়ে গেলেও তা সরকারি রেট অনুযায়ী ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করে দেয়। কিন্তু সেটা তখন ঠিক হয়ে যায় কি করে ? প্রশ্ন রইল সরকারের কাছে!

    আজ আমরা কৃষকের সন্তান হয়ে পারিনা ন্যায্যমূল্যে সরকারি রেট অনুযায়ী ধান বিক্রি করতে। কিন্তু আজ ক্ষমতাশালী ব্যক্তি থাকলে ন্যায্য মূল্যে ধান বিক্রি করা যেত বা যাবে। গত কয়েক বছর ধরে দেখে আসছি রুহিয়ায় যার হাত আছে, ক্ষমতা আছে বা ঘুষ দিতে পারেছে সেই ন্যায্যমূল্যে ধান বিক্রি করতে পেরেছে। কিন্তু সাধারণ কৃষক ন্যায্যমূল্য সরকারি রেট অনুযায়ী আজ পর্যন্ত কোন ধান বিক্রি করতে পারিনি কিন্তু কেন? তার কি কোন জবাব আছে কারো কাছে। একজন কৃষক বাকিতে সার-বিষ, বীজ ক্রয় করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ৩-৪ মাস কষ্ট করে ধান ফলায় আজ কৃষক বেকাদায়। আর যদি ন্যায্যমূল্য না পায় তাহলে কি করে কৃষকের দুঃখ দূর হবে বলেন তো। কৃষকের দুঃখ দেখার যেন কেউ নেই। কৃষকের দুঃখ দুঃখই থেকে যাবে কেউ একটু মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করবে না? যে অবস্থা বর্তমানে হয়েছে কৃষকের মুখে যেন হাসি ফুটতেই যাচ্ছে না।

    কৃষক দিশেহারা, দুচোখে জল ছাড়া কিছুই ভাবতে পারছে না কৃষক।  যে রেট করেছে সরকার তা যেন কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করা হয়। কোন রাজনৈতিক, ক্ষমতা ব্যাক্তিদের কাছ থেকে এবং ঘুষ খেয়ে কৃষকের ন্যায্য না মেরে যেন কিনা না হয়, কৃষকের কাছেই ধান।

    পত্রিকার পাতা খুললে যখন দেখি অভাবের তাড়নায় সরকারি মূল্যে ধান সময় মত বিক্রি করতে না পারায় কেউ ধানে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছি,আবার কেউ আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নেন, তখন বিবেকের দংশনে অস্থির হয়ে যাই। অথচ এ কৃষকের হাতেই নাকি সোনা ফলে। কাজেই সরকারের প্রতি অনুরোধ কৃষদের বাঁচতে দিন। সঠিক মনিটরিংয়ের মাধ্যমে কৃষকদের ঘামের যথাযথ মূল্যের ব্যবস্থা করুন। কৃষক বাঁচলেই দেশ বাঁচবে। দেশের কৃষকরা আজ কাঁদছে। তাদের চোখের পানিগুলো মুছে দিন।