স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এর পূর্বকথা এবং ফলাফল

    আকবর হোসেন রাজন : গরীব, দুঃখী, অসহায়, মেহনতী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে, উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে গণতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আজকের এই দিনে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন।

    ৭৫’র ১৫ আগস্ট পরিবারের সকল সদস্যকে নির্মমভাবে খুন করা হলে, বিদেশে থাকার দরুন বেঁচে যাওয়া তিনি ও তাঁর ছোটবোন শেখ রেহানা দেশে ফিরতে চাইলে স্বৈরশাসক জিয়ার দ্বারা রাষ্ট্রীয়ভাবে বাধাগ্রস্ত হন। ৭৫ থেকে ৮১ সাল পর্যন্ত দেশে ফেরার জন্য একাধিকবার আবেদন করলে স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের প্রত্যেকবারই তা নাকচ করে দেন।

    এই ০৬ বছরে জিয়ার শাসনামলে ২১ বার সেনাবিদ্রোহ বা সামরিক অভ্যুত্থান হয়। জিয়া তার প্রাণনাশের আশংকায় নিজের জীবন বাঁচাতে এবং ক্ষমতায় থাকার নতুন কৌশল বাস্তবায়ন করতে বড় রাজনৈতিক দলের শূন্যতার কথা ভেবে আওয়ামী লীগকে মাঠে নামিয়ে কৌশলে সেনাবিদ্রোহ দমনের মধ্য দিয়ে নিজে বাঁচার নতুন ফন্দি এঁটেছিলেন। এর থেকে বাঁচার একটিমাত্র উপায় ছিল- আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা’কে দেশে ফিরিয়ে আনা।

    স্বৈরশাসক জিয়া রাষ্ট্রীয় বাধা শিথিল করলে আওয়ামী লীগের সভাপতি গণতন্ত্রের মানসকন্যা জীবনের মায়া ত্যাগ করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে আজকের এই দিনে দেশে ফিরেন। এর বিপরীতে সেনা অফিসারেরা জিয়ার নীলনকশা সম্পূর্ণরূপে বুঝে গিয়েছিল। ফলশ্রুতিতে সময়ের কাজ সময়ে না করলে যা হয় আর কি- তারই ধারাবাহিকতায় ২২তম এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে ১৯৮১ সালের ৩০ মে জিয়া নিহত হন। ক্ষমতার মসনদ দখল করেন সামরিক স্বৈরশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ।

    জিয়া সিদ্ধান্ত নিতে বড় দেরী করে ফেলেছিলেন। তাইতো প্রবাদে বলে- “সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়”। ফলশ্রুতিতে কর্মফল মৃত্যু- “ডাক্তার আসিবার পূর্বে রুগী মারা গেলেন” মানে সিদ্ধান্ত দেরীতে নিয়েছেন বলেই জিয়া নিহত হয়েছেন।