নড়াইলের কলেজগুলোতে একাদশে ভর্তিতে নিরববাণিজ্য

    নড়াইল প্রতিনিধি■: নড়াইলের সরকারি কলেজসহ উপজেলার কলেজ গুলোতে একাদশ শ্রেণীতে মনগড়া ভর্তি ফি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

    অনুসন্ধানে জানা যায়, ভর্তির জন্য মন্ত্রণালয় নির্ধারিত ফির চেয়ে নামে-বেনামে বিভিন্ন খাত দেখিয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রালয় ভর্তি ফি নির্ধারণ করে নীতিমালা জারি করলেও নড়াইলের লোহাগড়ার কলেজগুলো মন্ত্রণালয় ও বোর্ডের সিদ্ধান্তের কোনো তোয়াক্কাই করছে না।

    এতে সন্তানকে ভর্তি করাতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ছেন অভিভাবকরা। ফলে মেধাবী দরিদ্র শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তি নিয়ে অভিভাবক পড়েছেন বিপাকে।

    অভিযোগে জানা যায়, যেসব শিক্ষার্থী ফরম সংগ্রহ করেছে তাদের কলেজ ভেদে দু’শ থেকে ১হাজার ৭’শ টাকা পর্যন্ত রসিদ ছাড়া অতিরিক্ত ফি দিতে হচ্ছে। গলাকাটা ফি আর নীরব চাঁদাবাজির কবলে পড়ে নাভিশ্বাস উঠেছে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের। আর এ কাজে আদায়কারীর দায়ীত্ব পালন করছেন খোদ কলেজ অধ্যক্ষরাই বেশির ভাগ স্থানে।

    বৃহস্পতিবার (২৭জুন) সকালে পৌর এলাকার নড়াইলের লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজে গিয়ে এমনটাই দেখা যায়। খোজ-খবর নিয়ে জানা যায়, নড়াইলের লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজে একাদশে ভর্তি ফি বাবদ ২হাজার ৫’শ, ইতনা স্কুল এন্ড কলেজে ২হাজার ৩’শ ২০, নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজ ২হাজার ৭’শ, লোহাগড়া সরকারী আদর্শ মহাবিদ্যালয় ২হাজার ৩’শ ৫৫ এবং এস এম এ আহাদ মহাবিদ্যালয় ১হাজার ২’শ ২০ টাকা করে শিক্ষার্থী প্রতি আদায় করা হচ্ছে।

    গত ২১ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও যশোর মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, একাদশ শ্রেণীর ভর্তিতে কলেজ গুলোর জন্য নির্দেশনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। নির্দেশনায় বলা হয়, একাদশে ভর্তি ফি বাবদ সর্বসাকুল্যে মফস্বল বা পৌর (উপজেলা) এলাকার কলেজগুলো ১ হাজার টাকার বেশি, জেলা সদরে অবস্থিত কলেজগুলো ২ হাজার টাকা এবং ঢাকা ছাড়া অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত কলেজগুলো ৩ হাজার টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না।

    অতিরিক্ত ফি নিলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে।

    অথচ নড়াইলের লোহাগড়ায় ভর্তি নিয়ে অনিয়ম গত দু’দিন ধরে যেন দেখার কেউ নেই। অবিলম্বে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থী।

    নড়াইলের লক্ষীপাশা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ তরফদার কামরুল ইসলামের কাছে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয় জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর ফোনটি কেটে সুইচ বন্ধ করে দেন।

    নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.শহীদুল রহমান জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস কলেজ নিয়ন্ত্রন করেনা।

    নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুকুল কুমার মৈত্র ও নড়াইল জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা জানান, সরকারী নীতিমালার বাহিরে অতিরিক্ত ফি আদায় করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    এ ব্যাপারে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক মো. গোলাম রব্বানী বলেন, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি বাবদ ১হাজার টাকার বেশি কোন কলেজ আদায় করলে তা হবে অনিয়ম-দুর্নীতি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    * লক্ষীপাশা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ তরফদার কামরুল ইসলাম ০১৭১১৩৭৫৩০৪
    * নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোশারেফ হোসেন ০১৭১২৯৩৩১৫৩
    * এস এম এ আহাদ মহাবিদ্যালয় অধ্যক্ষ মৈমুর আলী মৃধা ০১৭১৫২১৪৩০৯
    * যশোর বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক গোলাম রব্বানী ০১৭১২৬১২৭৭২
    * ইতনা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ বিশ্বনাধ চক্রবর্তী ০১৭৪০৯৪২২৬৫

    বিএম/উজ্জ্বল/এমআর