বিশ্ববিদ্যালয় অভ্যন্তরে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন
    কুবিতে শিক্ষার্থীর মোবাইল ছিনতাই, বান্ধবীকে থাপ্পড়!

    কুবি প্রতিনিধি : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করে এক শিক্ষার্থীর মোবাইল ছিনতাই এবং সাথে থাকা তার বান্ধবীকে থাপ্পড় দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

    শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে সানসেট ভ্যালি নামক স্থানে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে।

    ঘটনার ভুক্তভোগী অর্থনীতি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাশেদুল আলম সিফাত বাংলাদেশ মেইলকে জানান, আমি ও আমার বান্ধবী রাত ৮টার দিকে সানসেট ভ্যালিতে ঘুরতে যাই। সেখানে বসার কিছুক্ষণ পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছন দিক দুইজন বহিরাগত সন্ত্রাসী এসে আমাদের বকাবকি শুরু করে।

    একপর্যায়ে তারা দুজন ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে আমাদের যা আছে দিতে বলে এবং আমার বান্ধবীর ব্যাগ নিয়ে টানাটানি শুরু করলে আমি বাধা দিই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের একজন আমার বান্ধবীকে থাপ্পড় মারে এবং আমার হাতে থাকা ‘অপো-এ৭১’ ফোনটি কেড়ে নিয়ে চলে যায়। আমি দৌঁড়ে তাদের গতিরোধ করতে চেষ্টা করেও পেরে ওঠিনি।

    ভুক্তভোগী সিফাত জানান, ‘আমরা ওখানে যাওয়ার সময় নিকটস্থ বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের সামনে দুজন নিরাপত্তাকর্মীকে দেখি। কিন্তু এই ঘটনার সময় আমাদের চিৎকার শুনেও কেউ এগিয়ে আসেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে নিরাপত্তাহীনতার এমন দুরূহ অবস্থা আর কখনো দেখিনি।’

    সরেজমিনে দেখা যায়, ঘটনাস্থল সানসেট ভ্যালিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম দিকে নিরাপত্তা প্রাচীরের কোনো অস্তিত্ব নেই। এসব স্থান দিয়ে স্থানীয় লোকজন, তাদের গরু-ছাগল ও বহিরাগতরা অবাধে আসা যাওয়া করছে।

    তাদের পাশাপাশি স্থানীয় চুর-ছিনতাইকারীরা নির্বিবাদে প্রবেশ করছে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে। এতে করে কিছুদিন পরপরই এমন ধরনের চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। এসব ব্যাপারে প্রশাসনের নামকাওয়াস্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভাবিয়ে তুলছে শিক্ষার্থীদের।

    ঘটনার বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বাংলাদেশ মেইলকে জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে শিক্ষার্থীদের সাথে এমন ঘটনা প্রশাসনের নিরাপত্তাহীনতার চরম ব্যর্থতার পরিচয়। প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া। না হয় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’

    বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী বাংলাদেশ মেইলকে জানান, ‘এটা খুবই ভাবনার বিষয়। আমরা নিরাপত্তার ব্যাপারে আরও কঠোর হবো। ওদিকে সীমানা প্রাচীরের ব্যাপারে উপাচার্যের সাথে শীঘ্রই কথা বলবো।’

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বাংলাদেশ মেইলকে জানান, ‘ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। ঘটনাস্থলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ও যথাযথ লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। সীমানা প্রাচীর নির্মাণের বিষয়ে আমি উপাচার্যের সাথে কথা বলবো। পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনকেও বলবো রাতের বেলা টহলের ব্যবস্থা জোরদার করতে।

    বিএম/মাহফুজ কিশোর/আরএস..