প্রতারক মাহবুব ও তার স্ত্রীর প্রতারনারয় ১৯ শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ

বাংলাদেশ মেইল ::

প্রতারক স্বামী মুনতাসির মাহবুব ও তার সুন্দরী স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস রাফার প্রতারনার ফাঁদে পড়ে সিলেটের ১৯ ছাত্র-ছাত্রী ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাজ্যে।

ঢাকার মোহাম্মদপুর কাটাশুর এলাকার বাসিন্দা হয়েও সিলেটের ওয়েষ্ট ওয়ার্ল্ড শপিং সিটিতে চাকচিক্যময় স্টুডেন্ট কনসালটেন্সীর অফিস খুলে প্রতারনার ফাঁদ খুলে বসে এই দম্পতি। সিলেটে তাদের স্টুডেন্ট কনসালটেন্সী অফিসের নাম স্টেলার কনসালটেন্সী।

এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১৯ জন ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষার গ্যাপ দেখানোর নাম করে আরএম গ্রুপ নামের এক প্রতিষ্ঠানের ভূয়া প্যাড তৈরি করে চাকুরি দেখানোর পর হোম অফিস এই প্রতারনা ধরে ১৯ জন ছাত্র-ছাত্রীর ভিসা আবেদন বাতিল করে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।

এই প্রতারককে পুলিশে সোপর্দ করা হলেও সে সেটাও ম্যানেজ করে বের হয়ে এখন লাপাত্তা! এদিকে ভিসা আবেদন বাতিল ও ১০ বছরের নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ১৯ জন মিলে ইউনিভার্সিটিতে জমা দেয়া ৩ হাজার পাউন্ড করে ৫৭ হাজার পাউন্ডসহ ৭০/৮০ লাখ টাকার ক্ষতিতে পড়েছেন। ভূয়া কাগজ সাবমিটের কারনে ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয় এখন এই টাকা আর ফেরত দিবে না।

 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্টুডেন্ট ভিসার জন্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শুরুতে ১৯ শিক্ষার্থীর পাসপোর্টসহ ফাইলপত্র ভিএফএস- এ জমা দেয়া হয়। সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারের ওয়েস্ট ওয়ার্ল্ড শপিং সিটির (লিফটের -৪)৫ম তলায় অবস্থিত ‘স্ট্রেলার কনসালটেন্ট’র ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুনতাসির মাহবুব সবকটি ফাইল প্রসেসিং করে জমা দেন। ফাইলে জব সার্টিফিকেট হিসেবে আর.এম. গ্রুপের জব সার্টিফিকেটও দেয়া হয়। পাসপোর্ট জমা দেয়ার মাসখানেক পরে ব্রিটিশ হাইকমিশন থেকে শিক্ষার্থীদেরকে ই-মেইল পাঠানো হয়। ই-মেইল করে ব্রিটিশ হাইকমিশন জানায়, ভুয়া ডক্যুমেন্ট দেয়ায় ১০ বছরের জন্য তাদের ব্যান্ড (নিষেধাজ্ঞা) করা হয়েছে। ফাইলে দেয়া জব সার্টিফিকেটটি একেবারেই ভুয়া। একসাথে ১৯ শিক্ষার্থীকে ব্যান্ড বা নিষেধাজ্ঞার ঘটনায় শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। মুনতাসির মাহবুব শিক্ষার্থীদেরকে ভিসা পাইয়ে দিতে মার্চের প্রথম সপ্তাহে রিভিউ করেন। জুলাইয়ের শুরুতে রিভিউ এর ফলাফল জানায়, ব্রিটিশ হাইকমিশন। এবার হাইকমিশন জানায়, শিক্ষার্থীদের জব সার্টিফিকেটের সত্যতা নিশ্চিত হতে ব্রিটিশ হাইকমিশন থেকে সরাসরি আর.এম গ্রুপে খোঁজ নেয়া হয়। সরেজমিন গিয়ে জব সার্টিফিকেটগুলোর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। রিভিউয়েও ১০ বছরের নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে ব্রিটিশ হাইকমিশন।

সূত্র জানায়, স্টুডেন্ট ভিসার জন্যে জব সার্টিফিকেটের কোনো প্রয়োজন নেই। তবে, স্টাডি গ্যাপ (শিক্ষায় বিরতি) হলে অনেকক্ষেত্রে জব সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয়।

সহজভাবে ভিসা পেতে জব সার্টিফিকেট নিজে থেকে তৈরি করে দেন মুনতাসির মাহবুব। শিক্ষার্থীদের প্রবল আপত্তির মুখে মুনতাসির মাহবুব জব সার্টিফিকেটগুলো তৈরি করে দেন বলে তিনি নিজেও লিখিত দিয়ে স্বীকার করেন। অথচ, শিক্ষার্থীরা আর. এম গ্রুপের এই জব সার্টিফিকেট না দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।