সন্দ্বীপে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর
‘সাংসদের ভাই মামলা নেবে না পুলিশ ‘

বাংলাদেশ মেইল ::

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটলেও পুলিশ কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। স্থানীয়রা জানান,  আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে মিছিল সহকারে ভাংচুর করেছে দূর্বৃত্তরা।

চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলায় আত্ম মানবতার সেবায় প্রতিষ্ঠিত, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আব্দুল কাদের মিয়ার অর্থায়নে পরিচালিত হয় এই আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনার সময়  দেয়ালে থাকা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিও ভাংচুর করে মাটিতে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা ।

মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সন্দ্বীপ পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডস্থ আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে স্থানীয় সাংসদ মাহফুজুর রহমান মিতার ছোট ভাই, বাউরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে শতাধিক লোক মিছিল নিয়ে এই হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা। ঘটনার ২৪ ঘন্টা গত হলেও পুলিশ কোনো মামলা নেয়নি ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে।

জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল কাদেরের আর্থিক অনুদানের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। করোনাকালে বিশ হাজার মানুষকে এক মাসের খাদ্য পণ্যে বিতরণ করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা ফাউন্ডেশনের চেয়ার, টেবিল, প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্মেলিত ফ্রেম, বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুরসহ নগদ অর্থ লুটপাট করেছে। সাংসদের ভাইয়ের নেতৃত্বে এমন তাণ্ডব চালানো হলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয় নি বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, হামলার সময় বাধা দিতে গেলে ফাউন্ডেশনের দুই কর্মীকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে হামলাকারীরা। হামলায় আহত মোহাম্মদ মুন্সি ও রিয়াদকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

আব্দুল মালেক ফাউন্ডেশনের সাধারন সম্পাদক জামসেদ হোসেন জানান, ‘ হঠাৎ মিছিল নিয়ে এসে এই দাতব্য প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে হামলা করা হয়েছে। কর্মচারীদের মারধর করা হয়েছে । এমনকি প্রধানমন্ত্রীর ছবিও হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচে নি। তবুও পুলিশ মামলার এজাহার থেকে মুল নেপথ্য নায়ককে বাদ দিতে চায়। সাংসদের ভাইকে মামলার আসামী করা যাবে না। ‘

জানা যায়, এই হামলার প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মামলা করার চেষ্টা করলেও সাংসদ মাহফুজুর রহমান মিতা এই ঘটনায় তার ছোট ভাইকে এজহারে রেখে মামলা না গ্রহণ করতে স্থানীয় প্রশাসনকে নানান ভাবে চাপ করেছেন। সাংসদের ব্যক্তিগত সহকারী ও হারামিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনকে ঘটনার পর থেকেই সন্দ্বীপ থানার অফিসার ইনচার্জের রুমে পাঠিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনো মামলার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা ।জানতে বাউরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ তিনি প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর করেন নি। একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে সাংসদের বিরুদ্ধে  ষড়যন্ত্র করছে। ঘটনার সময় আমি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মিছিলে ছিলাম।  ‘

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, ‘ ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের পক্ষে লিখিত অভিযোগ গ্রহন ও মামলা করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে মামলা নেয়া হবে। ‘ মামলা নেবার বিষয়টিকে কেউ প্রভাবিত করতে পারবে না দাবি করে তিনি বলেন জড়িতদের কোন ধরনের ছাড় দেয়া হবে না।

স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন নিয়ে সাংসদের অনুসারীদের সাথে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাদের মিয়ার সমর্থকদের চরম দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ এমন ন্যাক্কারজনক  হামলা।