বান্দরবানে রুমা-থানচির সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বির্পযস্ত

বান্দরবান প্রতিনিধি :::

এইমাসে টানা ৭ দিনের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় ধসে বান্দরবান-রুমা-থানচি সড়ক ভেঙ্গে গেছে। এতে বন্ধ হয়ে যায় সব ধরনের যান চলাচল। ভোগান্তিতে রয়েছে দুই উপজেলার মানুষ। বান্দরবান থেকে রুমা-থানচি সড়কে পাহাড় ধসে বির্পযস্ত অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা।

সম্প্রতি ভারী বর্ষণে তীব্র পাহাড়ী ঢল ও ধসের কারণে বান্দরবান থেকে রুমা-থানচি সড়কে বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে থানচি-রুমা দুই উপজেলার অর্ধ লক্ষ মানুষ। এতে সপ্তাহের উপরে বন্ধ রয়েছে সব ধরণের যান চলাচল। রুমা সড়কের ২২ কিলো নামক স্থানে পুরো পাহাড়টাই ধসে গিয়ে রাস্তার কোন চিহ্নই নেই। যা আটকে পড়া একটি মালবাহী যানবাহন দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। রুমা সড়কের বেশির ভাগ জায়গায় পাহাড় ধসে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে রুমাবাসী ও বান্দরবান রুমা সড়কের এলাকাবাসী।

জেলা প্রশাসক  শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, ভারী বর্ষণে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করা হবে।

এদিকে,  ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক দিয়ে বাস ও ভারী যানবাহনের চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

জসিম উদ্দিন নামের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জানান,  বাস, ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকার কারণে পণ্য সরবরাহ স্তিমিত হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রামের সাথে সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করা না গেলে পচনশীল দ্রব্য পচে লোকসানের মুখোমুখি হবে ব্যবসায়ীরা।

এদিকে,  বান্দরবানে টানা প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন রুমা ও থানচি উপজেলায় সড়ক যোগাযোগ পুনঃস্থাপনে কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগ।আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ দুই উপজেলায় সড়ক যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করা যাবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: আমিন উল্লাহ নূরী।

শনিবার (১৯ আগস্ট) সকালে বান্দরবান-রুমা সড়কের ২৫ কিলোমিটার অংশ ও থানচি সড়কের পোড়া বাংলা এলাকায় বিধ্বস্ত সড়কগুলো পরিদর্শন করেন তিনি।

পরিদর্শন শেষ সচিব সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বান্দরবানসহ আশপাশের এলাকায় এবারের টানা প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রুমা-থানচি সড়ক যোগাযোগ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই চালু হবে।

ধসে যাওয়া স্থানগুলোতে মাটি কেটে নতুন সড়ক তৈরি করে সড়ক যোগাযোগ চালু করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

পরিদর্শনকালে সচিবের সাথে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর ৩৪ কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদুর রহমান, বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো: মইনুল হাসান, চট্টগ্রামে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো: জাহিদ হোসেন, রাঙ্গামাটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোফাজ্জল হায়দার, বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মোসলে উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।

এদিকে, সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বান্দরবান থানচি ও বান্দরবান রুমা সড়কের কমপক্ষে ২০টি স্থানে ছোট বড় পাহাড় ধসে পড়েছে। এসব জায়গায় নতুনভাবে সড়ক তৈরি করা হচ্ছে। রুমা সড়কের ২৫ কিলোমিটার অংশ ও থানচি সড়কের পোড়া বাংলা এলাকায় সড়ক এমনভাবে ধসে গেছে যে সড়কের অস্তিত্বই নেই। এসব স্থানে নতুন করে পাহাড় কেটে মাটি সরিয়ে নতুন সড়ক তৈরি করা হচ্ছে।

অন্যদিকে সড়কের সাথে থাকা বিদ্যুৎ সঞ্চালক লাইনের খুঁটি ধসে পড়ায় দীর্ঘদিন ধরে দুটি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু করতে কাজ করে যাচ্ছে বান্দরবানের বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ।

উল্লেখ্য, গত ৭ আগস্ট থেকে টানা প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বান্দরবানের সাথে রুমা ও থানচি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

বাংলাদেশ মেইল/সিপি