সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চট্টগ্রামের শিশুর কুরুচিপূর্ণ গালাগাল

বাংলাদেশ মেইল ::

বিদ্যুৎ বিড়ম্বনা নিয়ে ছোট এক শিশুর চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় গালাগাল সংবলিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।  এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন জনৈক গিয়াস উদ্দিন সিকদার৷

গিয়াস উদ্দিন সিকদার নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে নিজেকে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। নেটিজেনরা, গণমাধ্যমকর্মীর এমন পোস্টকে ঘিরে নানা সমালোচনায় মুখর রয়েছেন।

ভিডিওতে শিশুটিকে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় ….. পোয়া,….. মারানি ( প্রকাশযোগ্য নয়) এমন অশ্রাব্য কুরুচিপূর্ণ গালাগাল করতে দেখা যায় দেশের বিদ্যুৎ বিভাগকে। সরকারকে এমন অশ্রাব্য গালাগাল করা ভিডিওটি পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্টদাতা গিয়াস সিকদার লিখেছেন এমন গালাগাল তিনিও দিতে চান।

এদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত বাংলাদেশীরাও তীব্র সমালোচনা করেছেন ‘ এমন গালাগাল’ করা ভিডিও ফেসবুকে দেয়া নিয়ে।

ডেরা দুবাইয়ে বসবাসরত আব্দুর রহিম প্রতিবেদককে বলেছেন, ভিডিওটি যিনি ফেসবুকে দিয়েছেন তার বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায়। তিনি নাকি আবার সাংবাদিক।  ভিডিওতে অরুচিকর ‘গালাগাল ‘ দেয়া শিশুটিও চট্টগ্রামের। সেই কারনে চট্টগ্রামের সম্মানহানি হয়েছে। বিদ্যুৎ এর সমস্যাকে নিয়ে এমন অরুচিকর গালাগালের ভিডিও প্রচার  সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রই হবে। সেখানে চট্টগ্রামের লোকজনকে জড়িয়ে বিব্রত করা হয়েছে।  ‘

একই ধরনের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দুবাই প্রবাসী ব্যবসায়ী  রফিক উদ্দিন। তিনি বলেন, একটি শিশু আঞ্চলিক ভাষায় এমন করে গালাগাল দিতে পারে-ভেবেই অবাক লেগেছে। ফেসবুকে আবার সেটি প্রচার করছে একটি চক্র। নিশ্চিতভাবে সরকারকে গালি দেবার জন্য  বাচ্চাটিকে ব্যবহার করা হয়েছে। কেউ কেউ বিষয়টি মজা হিসেবে নিলেও এটি মোটেও সহ্য করার মতো কাজ নয়। প্রবাসীদের মোবাইলে মোবাইলে এই ভিডিও। গালি কি উপভোগ করার বিষয় হলো?  ‘

সারজায় বসবাসরত আবুল মনসুর বলেন,  ‘ সরকার তথ্য প্রযুক্তি আইনের প্রয়োগ সঠিক জায়গায় সঠিকভাবে করে না বলেই এমন ভিডিও ছড়িয়ে রাষ্ট্রকে বিব্রত করা হচ্ছে। ‘

জানা যায় ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরিয়ে নিতে পোস্টদাতা গিয়াস সিকদারকে অনুরোধ করলেও তিনি শুনেন নি। এই বিষয়টি দুবাইস্থ দূতাবাসের জানিয়েছেন প্রবাসীরা।

এদিকে, অবুঝ শিশুকে দিয়ে এমন ভিডিও বানিয়ে ছড়িয়ে দেয়াকে মানসিক বিকৃতি হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। এই বিষয়ে ড. তাহেরা সোবহান বলেন, সমাজ যে নৈতিকভাবে কতখানি অধঃপতনের শিকার সেটি বুঝার জন্য একটি ভিডিওটি যথেষ্ট। বিদ্যুৎ বিড়ম্বনা নিয়ে বিরক্ত যে কেউ হতেই পারে, সমালোচনাও করা যায়। তাই বলে একটি বাচ্চা শিশুকে বলির পাঁঠা বানানো ঠিক হয় নি। ‘

দুবাই প্রবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায় পোস্টদাতা গিয়াস উদ্দিন সিকদার আরব আমিরাতে বসবাস করে আসছেন বেশ কিছুদিন ধরে। বেসরকারী টেলিভিশন এনটিভির ক্যামেরাম্যান হিসেবে কিছু কাজ করেছেন।  সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকার একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে টাকা দিয়ে সেখানকার প্রতিনিধি হিসেবে যুক্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

একটি অবুজ শিশুর এমন করুচিপূর্ণ গালাগাল ব্যবহার করে তৈরি করা ভিডিওটি সরিয়ে নেয়া জরুরি মনে করেন সমাজ বিশ্লেষকরা। পাশাপাশি ভিডিও’র নেপথ্যে কারা সেটি বের করা উচিত বলে মনে করছেন তারা।